|
|
|
|
মাঝেমধ্যেই অগ্নিকাণ্ড এনজেপি এলাকায় |
তবু অবাধ তেলের চোরাকারবার |
নমিতেশ ঘোষ • শিলিগুড়ি |
কোথাও বাড়ির ভেতর কুয়োতে রাখা পেট্রোল। আবার কোথাও দোকানে বড় বড় পাত্রে মজুত করে রাখা চোরাই ডিজেল। গোটা এলাকা যেন জুতুগৃহ! নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) বাজার থেকে বস্তি এলাকায় গেলে এমনই অভিযোগ শোনা যাবে। পর পর দু’টি অগ্নিকাণ্ডের পরে সে ঘটনা প্রকাশ্যে এলেও চোরাকারবারীদের এক জনকেও ধরতে পারেনি পুলিশ। ভক্তিনগর সদর সার্কেলের এক পুলিশ অফিসারের যুক্তি, “পুলিশি অভিযানের আগেই চোরাই তেল সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগে থেকেই সতর্ক হয়ে যাচ্ছে চোরাকারবারীরা। ধারাবাহিক ভাবে অভিযান চালানো হবে।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাত ১০টার পরেই এনজেপি বাজার, জনতা পাড়া, সাউথ কলোনি, ইন্ডিয়ান অয়েলের সামনের এলাকায় চোরাই তেল কারবারীদের গতিবিধি শুরু হয়ে যায়। সপ্তাহে অন্তত চার দিন গভীর রাতে ট্রেনের ট্যাঙ্কার তেল নিয়ে এনজেপিতে যায়। রেল পুলিশ সূত্রে খবর, ট্যাঙ্কার থেকে এক দল যুবক মোটা প্লাস্টিকের প্যাকেট, প্লাস্টিকের বড় পাত্রে তেল বোঝাই করে এনজেপি বাজারের দোকান, সাউথ কলোনির বিভিন্ন বাড়িতে মজুত করে। রেল পুলিশের একাংশও ওই কারবারে জড়িত বলেও অভিযোগ। বাজারে পুলিশি টহলদারির সময় তেলের কারবার হয় কী করে?
শুধু ট্রেনের টাঙ্কারের তেল নয়, ইন্ডিয়ান অয়েলের যে ট্যাঙ্কারগুলি তেল নিয়ে যাতায়াত করে তা থেকেও চুরি হয় বলে অভিযোগ। বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পের সঙ্গে তেলের কারবারীদের যোগাযোগ রয়েছে। ওই চোরাই তেল রাতারাতি পেট্রোল পাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এনজেপি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শঙ্কর ঘোষ বলেন, “সবার সামনেই তেলের কারবার চলে। কেউ যদি বলেন আমি তেলের কারবার নিয়ে কিছু জানি না, ঠিক বলবেন না। প্রশাসনের বিষয়টি না হয় তারাই দেখবেন। সবচেয়ে বিপদ হয়েছে আমাদের। তেলের গুদামের আগুন থেকে বাজার ভস্মীভূত হয়ে যেতে পারে। সে সময় আমরা কী করব। সেদিনের ঘটনা এবং গত বছরের একটি আগুনের ঘটনা আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছে। এর পরেও ব্যবস্থা না নিলে বড় বিপদ হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পর পর দু’দিন এনজেপি বাজারে আগুন লাগে। প্রথমদিন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের একটি পার্টি অফিস সহ ১৬টি দোকান পুড়ে যায়। পরের দিনই আবার বাজারের একটি দরজির দোকান পুড়ে যায়। দুটি ঘটনাতেই দোকানের ভেতর বড় পাত্রে বেআইনি ভাবে তেল মজুত করে রাখা হয়েছিল বলে দমকলের তরফে জানানো হয়। ব্যবসায়ারীও জানান, দুটি অগ্নিকাণ্ডের পেছনে চোরাই তেল রয়েছে। ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার রাতে এবং বুধবার বেশ কয়েক জায়গায় অভিযান চালিয়ে পুলিশকে চোরাই তেল মজুতের নমুনা দেখান। বেশ কিছু পাত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়। ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দী বলেন, “চোরাই তেলের কারবার রুখতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। দ্রুত কাজ হবে বলে আশা করছি।’’ |
|
|
|
|
|