ভুল কবুল সম্মেলনে
পাহাড় সমস্যা দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখার জন্যই বাম সরকার এবং দল সম্পর্কে মানুষের কাছে ভুল বার্তা গিয়েছে বলে মনে করছে সিপিএমের শিলিগুড়ি জোনাল কমিটি। বুধবার দলের শিলিগুড়ি জোনাল কমিটির সম্মেলনে বিষয়টি নেতারা স্বীকার করেছেন। দলীয় সূত্রের খবর, সম্পাদকীয় প্রতিবেদনেও খোলাখুলি তা কবুল করা হয়েছে। সিপিএমের এক জোনাল নেতা বলেছেন, “পাহাড় সমস্যা নিয়ে বামফ্রন্ট সরকারের দীর্ঘসূত্রিতার জন্য সমতলের মানুষ, বিশেষ করে বাংলাভাষিরা বামফ্রন্ট সম্পর্কে ভুল বোঝে। এতে দলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। নেপালি ভাষিরা সিপিএম থেকে দূরে সরেছে। অন্য ভাষাভাষীরা সিপিএমের প্রতি বিভ্রান্ত হয়ে দূরে সরে গিয়েছে। জেলার পঞ্চায়েত, পুরসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে দলের খারাপ ফল এর অন্যতম কারণ।” তবে পাহাড় নিয়ে কংগ্রেস, তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপি’র কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। দার্জিলিং জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর এক প্রবীণ সদস্য বলেন, “বিষয়গুলি নিয়ে আগেই পার্টিতে খোলাখুলি আলোচনা করা উচিত ছিল। এতে শিলিগুড়ির মানুষের কাছে পরিষ্কার বার্তা যেত। তা না করায় আখেরে ক্ষতি হয়েছে। জোনাল সম্মেলনে যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে তা নিয়ে ডিসেম্বরের জেলা সম্মেলনে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।” পাহাড় সমস্যা ছাড়া পঞ্চায়েত, পুরসভা, লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে শিলিগুড়িতে দলের বিপর্যয়ের জন্য দলের একাংশ নেতাদের জনবিচ্ছিন্নতা এবং অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দায়ী বলেও সিপিএমের জোনাল কমিটির অভিমত। শিলিগুড়ি পুরসভার ক্ষেত্রে পুর বোর্ড ঠিকঠাক পরিচালনা করা হয়েছিল কি না তা নিয়েও সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। ঘটনা হল, ওই বোর্ডের মেয়র ছিলেন নুরুল ইসলাম। যিনি গত পুরভোটে নিজে জিতলেও সামগ্রিক ভাবে পুর এলাকায় পর্যুদস্ত হয়েছেন বামেরা। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রার্থী বাছাই ঠিক হয়নি বলেও সম্মেলনে খোলাখুলি সমালোচনা করেছেন অনেক নেতাই। তার উপরে শহরের নেতাদের একটি বড় অংশের মধ্যে আত্মতুষ্টির কারণে ফল খারাপ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পুরভোটে অন্তর্ঘাত হয়েছে বলেও সন্দেহ করছেন জোনাল কমিটির নেতারা। কমিটির এক নেতার কথায়, “অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ গা-ছাড়া মনোভাব দেখিয়েছিলেন। তাঁদের মনোভাব ছিল এই ওয়ার্ডটা হাতছাড়া হলে কী হবে, বোর্ড তো হবেই। আবার কিছু ওয়ার্ডে প্রার্থী মনপসন্দ না-হওয়ায় সে ভাবে প্রচারে নামেননি অনেকে। এটা অন্তর্ঘাত তো বটেই। তার পুনরাবৃত্তি এড়াতেই আলোচনা হয়েছে সম্মেলনে।” পাশাপাশি, গোটা রাজ্যের মতো শিলিগুড়িতেও দল যে ক্রমশ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সে তথ্য সামনে রেখেও আলোচনা হয়েছে সম্মেলনে। দলীয় সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির মত রেকর্ড ভোটে জেতা বিধানসভা কেন হারতে হলে তা নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন বলে দলীয় নেতারা মনে করছেন। সম্মেলনে বলা হয়েছে, সারা রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়া থাকলেও শিলিগুড়িতে দল জিতবে এমন বদ্ধমূল ধারণা নেতাদের বড় অংশের মধ্যে কাজ করছিল। সভা, সমিতি মিছিলে প্রচুর লোক সমাগম হলেও বাড়ি বাড়ি মানুষের কাছে সঠিক বার্তা পৌঁছানো গিয়েছিল কী তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। এই ক্ষেত্রে টানা প্রচার মাধ্যমের আক্রমণকেও হারের অন্যতম কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। শিলিগুড়ি জোনাল কমিটির আওতায় ছয়টি লোকাল কমিটি রয়েছে। জোনাল সম্পাদক হিসেবে ফের দায়িত্ব পেয়েছেন মুকুল সেনগুপ্ত। তবে বয়সজনিত কারণে নিখিল গুহ, পরিতোষ দাস সহ কয়েকজনকে কমিটি থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.