পরিবহণ নিগম
বেতন-জট কাটার ইঙ্গিত, হুঁশিয়ারি ইউনিয়নগুলিরও
শেষ পর্যন্ত তিনটি সরকারি পরিবহণ নিগমের কর্মীদের অক্টোবর মাসের বেতন মঞ্জুর করল রাজ্য সরকার। তবে ৬১০ জন কর্মীর বেতন মঞ্জুর হয়নি। মহাকরণ সূত্রের খবর, এই প্রথম এ রাজ্যে ‘বিধিবহির্ভূত নিয়োগে’র অভিযোগ এনে বেতন না-মঞ্জুর হল। সরকারের আশা, প্রথা মেনে পরবর্তী পর্যায়গুলো সারলে মঙ্গলবার এই তিন নিগম অর্থাৎ সিএসটিসি, সিটিসি এবং এসবিএসটিসি--র কর্মীরা বেতন পাবেন। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এনবিএসটিসি) কাছ থেকে পর্যাপ্ত তথ্য না-আসায় অর্থ দফতর শুক্রবারও তাদের কর্মীদের বেতন মঞ্জুর করেনি।
জট কাটার ইঙ্গিত মিললেও শেষ পর্যন্ত সরকারি পরিবহণ সংস্থার কর্মীদের বেতন এবং পেনশনের সমস্যা না-মিটলে এ দিনই বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে বাম এবং অ-বাম, সব পক্ষই। সিটুর ঘোষণা, সমস্যার সমাধান না-হলে শ্রমিকেরা বাস-ট্রাম চালানো বন্ধ করে দেবেন। আইএনটিইউসি-র হুমকি, ডিপোয় ডিপোয় আধিকারিকদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হবে। এবং তার পরে পরিবহণমন্ত্রীর বাড়িতেও ঘেরাও করা হবে।
অক্টোবর মাসের বেতন-বাবদ এ দিন সিটিসি-র জন্য অর্থ দফতর মঞ্জুর করেছে ৪ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা। সিএসটিসি এবং এসবিএসটিসি-র কর্মীদের জন্য মঞ্জুর হয়েছে যথাক্রমে ৬ কোটি ৯০ লক্ষ ৩০ হাজার এবং ৪ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা। পরিবহণ দফতরের বিশেষ সচিব তারাপদ মাজি এই তথ্য জানিয়ে বলেন, “এই তিন সংস্থার যথাক্রমে ৩৫৮ জন, ৮৬ জন এবং ১৬৭ জন কর্মীর বেতন অর্থ দফতর মঞ্জুর করেনি।” তিনি বলেন, কর্মীদের দেয় অর্থ সোমবার পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেখানে প্রয়োজনীয় কাজের পরে টাকা যাবে ব্যাঙ্কে। বেতনের অর্থ মঞ্জুর করাতে সিটিসি-র চেয়ারম্যান শান্তিলাল জৈন এ দিনও মহাকরণে অর্থ দফতরে তদ্বির করেন। তিনি বলেন, “মঙ্গলবার কর্মীরা বেতনের টাকা পেয়ে যেতে পারেন।” পরিবহণ নিগম কর্মীরা নভেম্বর মাসের বেতন কবে পাবেন, তার কোনও স্পষ্ট জবাব অবশ্য দিতে পারেননি পরিবহণ কর্তারা।
পরিবহণ নিগমগুলির কর্মীদের বেতন এবং অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে এ দিন কলকাতায় সিএসটিসি-র সদর দফতরের সামনে যৌথ প্রতিবাদসভা থেকে রাজ্য সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে সিপিএম, কংগ্রেস এবং নকশালপন্থী শ্রমিক সংগঠনগুলি। গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের একাংশ আটকে এ দিনের জমায়েতে শ্রমিকেরা ডিউটি সেরেই এসেছিলেন বলে দাবি ইউনিয়ন নেতৃত্বের। কিন্তু সিটুর রাজ্য সভাপতি তথা সিপিএম সাংসদ শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, “৬ মাসের আগের অবস্থা এখন অনেকটাই পরিবর্তিত। সরকারকে আরও সময় হয়তো মানুষ দেবেন কিন্তু সেটা কখনওই শ্রমিক-কর্মচারীদের রুটি-রুজির বিনিময়ে নয়! আজ শ্রমিকেরা বাস-ট্রাম চালিয়ে এসেছেন। এর পরে বাস-ট্রাম চালানোর দায়িত্ব আর শ্রমিকদের থাকবে না!”
কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র কার্যনির্বাহী সভাপতি রমেন পাণ্ডে (যাঁকে বামপন্থী ইউনিয়নগুলির সঙ্গে সব কর্মসূচিতেই এখন দেখা যায়) হুমকি দেন, “শ্রমিকেরা যদি বেতন না-পান, তা হলে ডিপোয় ডিপোয় আধিকারিকদের অফিসে ঢোকার কোনও অধিকার নেই! শ্রমিকেরা এটা মাথায় রাখবেন। এতেও কাজ না-হলে পরিবহণমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও করা হবে।” রাজ্য সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে পরিবহণে বেশ কিছু ‘বেআইনি নিয়োগ’ হয়েছিল। সেই সব কর্মীর দায়িত্ব বর্তমান সরকার নিতে চায় না। এর জবাবে সিটুর সাধারণ সম্পাদক কালী ঘোষ এ দিনের সভায় বলেন, “বেআইনি নিয়োগ হয়ে থাকলে তার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। কিন্তু যে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হয়েছে, তাঁদের বেতন বন্ধ করার অধিকার কারও নেই।” দুই বাম শরিক সংগঠন এআইটিইউসি-র রণজিৎ গুহ এবং ইউটিইউসি-র অশোক ঘোষ এবং নকশালপন্থী এআইসিসিটিইউ-এর দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদ-সভায় বক্তা ছিলেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.