আত্মসমালোচনাই হোক সম্মেলনে, চান বিমানরা
সিপিএমের সম্মেলন-পর্ব শুরু হতেই দলের অন্দরে ক্ষোভ-বিক্ষোভের প্রতিফলন ঘটতে শুরু করেছে। নিচু তলার কর্মীরা কাঠগড়ায় তুলছেন শীর্ষ নেতৃত্বকেও। কিন্তু সম্মেলনের এই প্রক্রিয়া দলে ‘আত্মসমালোচনা’র মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার হোক, চাইছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বই। রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু স্বয়ং একটি পুস্তিকা লিখে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সম্মেলনে আত্মসমালোচনা-ই তাঁরা চাইছেন।
‘প্রসঙ্গ পার্টি সম্মেলন’ শীর্ষক ওই পুস্তিকায় বিমানবাবু লিখেছেন, ‘পার্টি নিশ্চয়ই বিতর্ক-সভা হবে না। কিন্তু নির্দিষ্ট কমিটি স্তরে সদস্যদের মধ্যে বা সম্মেলনে আলোচনার সুযোগ না-দিয়ে তাঁদের নির্দিষ্ট বক্তব্য না-শুনে যান্ত্রিক ভাবে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হলে, তা কখনও গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার নীতিকে সঠিক ভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে না। অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র যথোচিত ভাবে বিকশিত হলেই তার ভিতের উপরে গড়ে ওঠে প্রকৃত গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার নীতি’। বস্তুত, বিমানবাবু বোঝাতে চেয়েছেন, কমিউনিস্ট পার্টি বলতেই ‘লৌহ যবনিকা’র যে ছবি জনমানসে ফুটে ওঠে, তা বাস্তব নয়। সম্মেলনের মাধ্যমে দলের সর্ব স্তরের কর্মীরা যে ভাবে খোলাখুলি মত জানাতে পারেন, তাতেই প্রমাণ হয় সিপিএমের মতো ‘গণতন্ত্র’ আর কোনও দলে নেই।
তবে একই সঙ্গে বিমানবাবু সতর্ক করে দিয়েছেন, সমালোচনা ও আত্মসমালোচনা যেন শুধু ‘ব্যক্তিকেন্দ্রিক’ হয়ে না-দাঁড়ায়। দলের অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে শুধুই বিষোদগার না-করে দলীয় কর্মীরা যাতে নিজেদের দায়-দায়িত্ব পালনের কথা সম্মেলনে সবিস্তার ব্যাখ্যা করেন, সেই নির্দেশিকাই দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক। বিমানবাবুর কথায়, ‘সর্বত্র এমন কমরেড খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা নিজের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন না-করলেও অন্যকে দায়িত্ববোধে উদ্বুদ্ধ করার দুঃসাহসিক চেষ্টা করেন! এ কি কখনও সম্ভব? আমাদের একটি প্রচলিত কথা আছে, আপনি আচরি ধর্ম, পরেরে শিখাও’! বিমানবাবু ব্যাখ্যা করেছেন, দলীয় কর্মীরা সম্মেলনের মঞ্চে তাঁদের উপরে ন্যস্ত দায়িত্ব পালনে সাফল্য বা ব্যর্থতার কথা পরিষ্কার করে না-বললে দলের তরফে তাঁদের ‘বিজ্ঞানসম্মত’ মূল্যায়ন সম্ভব নয়। পরবর্তী কমিটিতে কাদের রাখা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নিতেও অসুবিধা হয়।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য কমিটির তরফে বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের সবিস্তার পর্যালোচনা ইতিমধ্যেই হয়ে থাকলেও সম্মেলন-পর্বে এই নিয়ে আরও আলোচনা চাইছেন নেতৃত্ব। ‘পরিবর্তিত’ পরিস্থিতিতে দলের জোনাল ও লোকাল স্তরে আরও বেশি মতবিনিময় করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপরে জোর দিয়েছেন বিমানবাবু। সর্ব ক্ষণের কর্মী বাড়ানোর কথা বলেছেন। বামফ্রন্টের শরিকদের সঙ্গে আরও বেশি যোগাযোগ বজায় রেখে কাজ করার কথাও উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘সুযোগসন্ধানী’ যে অংশ দলের মধ্যে ঢুকে তাদের ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে, তাদের চিহ্নিত করে বাদ দিতে হবে এই সম্মেলন থেকে। বিমানবাবু লিখেছেন, ‘জনগণের সামনে কমিউনিস্টদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার লক্ষ্যে আমাদের পার্টিতে এখন বলশেভিক প্রতিযোগিতা করা প্রয়োজন’।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.