ঝকঝকে একতলা ভবনে গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষকের অভাবে বর্তমানে বিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অবস্থা এমনই জায়গায় পৌঁছেছে, শিক্ষকের অভাবে মাঝমধ্যেই স্কুল তালাবন্ধ রাখতে হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলত ব্লকের ফলতা ফোর্ট রিফিউজি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমনই অবস্থা। ফলে সঙ্কটে পড়েছেন ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকেরা। সমস্ত বিষয়টি শিক্ষা দফতরে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি গ্রামবাসীদের। |
গ্রামবাসীদের কাছে জানা গেল, ১৯৭৪ সালে এই বিদ্যালয়টি সরকারি অনুমোদন পায়। তখন খড়ের চালের কাঁচা বাড়িতেই চলত বিদ্যালয়। বহু পরে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় তৈরি হয় আজকের পাকা একতলা ভবন। বিদ্যালয়ের বর্তমান পড়ুয়ার সংখ্যা ৬০ জন। বিদ্যালয় শুরুর সময় থেকে একজন শিক্ষকই ছিলেন। বহু বারই শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নানা মহলে দাবি জানান হয়েছিল বলে গ্রামবাসীরা জানান। কিন্তু সেই দাবি পূরণ হয়নি। সম্প্রতি স্কুলের একমাত্র শিক্ষককেও অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়। ওই শিক্ষকের বদলি নিয়ে সরব হয়েছিলেন গ্রামের মানুষ। এমনকী স্কুলে তালাও ঝুলিয়ে দেন। পরে ওই শিক্ষকের পরিবর্তে স্কুলে একজন অস্থায়ী শিক্ষিকা এলেও আর কোনও শিক্ষক না থাকায় বরাবরের মতোই ব্যাহত হচ্ছে পঠনপাঠন। পরিস্থিতি এমনই যদিও কোনওদিন ওই অস্থায়ী শিক্ষিকা স্কুলে না আসেন সে ক্ষেত্রে স্কুল বন্ধ রাখা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও উপায় নেই।
গ্রামবাসী শ্যামল রায়, বিপ্লব দাসদের অভিযোগ, একজন শিক্ষিকাকে দিয়ে ৬০ জন ছাত্রছাত্রীর পঠনপাঠন চলতে থাকায় যা হওয়ার তাই হচ্ছে। ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে না। স্কুলের মিড ডে মিল নিয়মিত হয় না। তা ছাড়া এক শিক্ষিকা হওয়ায় তাঁকে মিড ডে মিলের তদারকিতেই যদিও ব্যস্ত তাকতে হয় তাহলে পড়াবেন কখন। তা ছাড়া যে ঘরে মিড ডে মিল রান্না সেই ঘরের ছাদ দিয়ে জল পড়ে। |
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্কুলের এতসব সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বিডিও-র এ সব দিকে কোনও নজরই নেই। যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অস্থায়ী ওই শিক্ষিকা জানান, স্কুলের সমস্যার ব্যাপারে তিনি স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরিদর্শক এসে খোঁজও নিয়েছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সুরঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “আমি স্কুলের সমস্যার ব্যাপারে শুনেছি। স্কুল পরিদর্শককে এই নিয়ে কারণ দর্শাতে বলেছি। কিন্তু তিনি আসেননি। সমস্ত বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
|