রাস্তা দিয়ে হাঁটা সমস্যা। ক্রমশই যানজট বাড়ছে। সরু সরু গলি দিয়ে যাতায়াত। সেখানে সার দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকছে একের পর এক গাড়ি। শহরের বাসিন্দাদের বক্তব্য, শহরটাও যেন একই ভাবে থমকে রয়েছে। আগের পুরসভার থেকে পরিষেবার অগ্রগতি ঘটেছে নামমাত্র।
শহরের মানুষ বলছেন, এই পুরবোর্ড সব থেকে বেশি সচেতনতা দেখিয়েছে পানীয় জল সরবরাহের ব্যাপারে। শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলটুসি বেগম বলেন, “আগের পুরসভার ক্ষেত্রে কোনওদিন জল বন্ধ থাকলে তা কিন্তু শহরের মানুষ জানতে পারতেন না। বরং আমরা অপেক্ষা করে থাকতাম। এখন আগে থেকেই পুরসভা ঘোষণা করে দেওয়া শুরু করায় আমরা আগে থেকেই জলের বিকল্প ব্যবস্থা করে ফেলতে পারি।” শহরের বাসিন্দা সব্জি ব্যবসায়ী মোক্তার শেখ বলেন, “সারা শহরে সচেতনতা বাড়াতেও উদ্যোগী হয়েছে বর্তমান পুরবোর্ড। বেশ কিছু বোর্ড লাগানো হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে জন্ম-মৃত্যুর নথিভুক্তি করণ সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ফেলতে।” এই পুরবোর্ড ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি জলাধার তৈরি করেছে। এ ছাড়া, ১৩, ১৪ এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষজনের নানা সমস্যা ছিল। যেমন জল খুব কম আসত, অনেকের বাড়ি পর্যন্ত জল পৌঁছতই না। পুজোর পর থেকে কিন্তু সে সব এলাকায় পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। জল এখন অনেক বেশি পাচ্ছেন এলাকার লোকজন। ব্যবসায়ী দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে শহরকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কোথাও জল আগে আসছে, কোথাও পরে। ফলে সরবরাহের ক্ষেত্রে জলের পরিমাণ একই থাকছে। আগে যা কমে-বেড়ে যেত।”
তবে বিগত বামফ্রন্ট বোর্ডের পুরপ্রধান প্রিয়রঞ্জন ঘোষের বক্তব্য, “গত দেড় বছরে পুর পরিষেবা কোনও ক্ষেত্রেই বাড়েনি। বরং সবেতেই তা নিম্মগামী।” তাঁর অভিযোগ, “অনুষ্ঠান বাড়ি বা কমিউনিটি হলের ভাড়া আগের থেকে এখন অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। তার ফলে ছোট সংগঠনগুলি ওই হল ভাড়া করতে পারছে না।”
শিক্ষিকা রমেলা পাল বলেন, “শহরের অনেক রাস্তাতেই কোনও মতে সংস্কার করা হয়েছে। ফলে সেই সব রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। নিকাশি ব্যবস্থাও খুবই খারাপ।” একই অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী সনাতন দাস। তাঁর কথায়, “রাস্তা পরিষ্কার করা হয় না। নিকাশি নালাগুলিতে মশার উৎপাত শুরু হয়েছে। কিন্তু কীটনাশক ছড়ানোর কোনও ব্যবস্থা নেই।” তাঁর কথায়, “শোভাযাত্রা বেরোনোর পরের দিন রাস্তা ঝাঁট দেওয়ার কথা। কিন্তু তা হয়নি। তাই রাস্তা সে ভাবেই পড়ে রয়েছে।”
বেলডাঙার পুরপ্রধান কংগ্রেসের অনুপমা সরকার বলেন, “আমরা পানীয় জলের জন্য অনেক রকম ব্যবস্থা করেছি। তবে যানজট এড়ানোর জন্য অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও পুরসভায় টাকা কম থাকায় নতুন কর্মী নিয়োগে সমস্যা হচ্ছে। কর্মীর অভাবেই নিকাশি নালাও পরিষ্কার করার কাজ ব্যাহত হচ্ছে কখনও কখনও। তবে আমরা বসে নেই। যা করার তা খুব তাড়াতাড়িই করা হবে।” সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “পুর উদ্যানকে নিয়ে আমরা নতুন করে ভাবনাচিন্তা করছি।” |