জেলায় আইন অমান্য বামেদের
রাজ্যে ‘লাগামহীন’ সন্ত্রাস এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং মূল্যবৃদ্ধি রদ-সহ বেশ কয়েক দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার মেদিনীপুর ও তমলুকদুই মেদিনীপুরের জেলাসদরে জেলাশাসকের অফিসের সামনে ‘আইন অমান্য’ করল জেলা বামফ্রন্ট।
পশ্চিমে নেতৃত্বে ছিলেন জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার, সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা-সহ অন্য ফ্রন্ট নেতারা। পূর্বে নেতৃত্ব দেন জেলা সিপিএম সম্পাদক কানু সাহু, প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ, সিপিআইয়ের নিরঞ্জন ঘড়া, আরএসপি-র অমৃত মাইতি, ফরওয়ার্ড ব্লকের গোপাল মাইতি, সোশ্যালিস্ট পার্টির রঞ্জিত মান্না প্রমুখ। এই ‘আইন অমান্য’ কর্মসূচি ঘিরে এ দিন সকাল থেকে কালেক্টরেট মোড়ে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বামেদের মিছিলের গতিরোধ করা হয় সেখানেই। তমলুকে বহু দিন পরে ভাল রকম জমায়েত করে বামেরা। হাজার পাঁচেক বামপন্থী কর্মী-সমর্থক জমায়েতে সামিল হন। এক হাজার কর্মী-সমর্থক প্রতীকী গ্রেফতার বরণ করেন।
তমলুকে জেলাশাসকের দফতরের সামনে আইন অমান্য।
একদা ‘লালদুর্গ’ পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিধানসভা ভোটের পরে প্রভাব বেড়েছে তৃণমূলের। সিপিএম-সিপিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের একটা অংশও সুযোগ বুঝে কিংবা নতুন শাসকদলের হুমকির জেরে যোগ দিয়েছে তৃণমূলে। গড়বেতা, কেশপুরের মতো এলাকাতেও এখন সিপিএমের প্রভাব তলানিতে। আবার বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে সিপিএমের তাবড় নেতা-কর্মীরা হয় জেলবন্দি হয়েছেন অথবা ‘ফেরার’ রয়েছেন। অনেকে আবার ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়েও পড়েছেন। নতুন শাসকদলের বিরুদ্ধে জোর-জুলুম, তোলা আদায়, মারধরের অভিযোগও বারে বারেই উঠেছে বাম-শিবির থেকে। পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ সেই ২০০৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকেই। এ হেন পরিস্থিতিতে পশ্চিমে গত কয়েক মাস তেমন কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিই নিতে পারেননি বাম নেতৃত্ব। তবে মাসখানেক ধরে পরিস্থিতি ফের ঘুরতে শুরু করেছে। সিপিএম তথা বাম নেতৃত্বের দাবি, ছ’মাসেই নতুন সরকার তথা নতুন শাসকদল সম্পর্কে বিরক্তি তৈরি হতে শুরু করেছে জনমনে। দুর্নীতি ও মূল্যবৃদ্ধির জেরে কংগ্রেস-নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় সরকারও দ্রুত জনসমর্থন হারাচ্ছে বলেই মনে করছে বাম-শিবির। এই পরিস্থিতিতে দলের কর্মী-সমর্থকদের ফের নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে চাঙ্গা করে তুলতে তৎপর হয়েছেন বাম নেতারা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগেই ক’দিন আগে মেদিনীপুর শহরে মহামিছিল করেছে বামফ্রন্ট। যে মিছিল ঘিরে জমায়েত ছিল চোখে পড়ার মতোই। এ দিন তমলুকের জমায়েতও ছিল নজরকাড়া।
শুক্রবারের ‘আইন অমান্য’ কর্মসূচিতে মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলের মাঠে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন বাম নেতারা। সিপিআইয়ের সন্তোষবাবু বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষ চরম সমস্যায় পড়েছেন। অথচ, কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কোনও হেলদোল নেই। রাজ্যের নতুন সরকার একেবারেই গরিব মানুষের সরকার নয়।” জেলা জুড়ে লাগামহীন সন্ত্রাস চলছে বলে অভিযোগ করে সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপকবাবু বলেন, “বহু কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া। ঘরে ফিরতে গেলেই বাধা দেওয়া হচ্ছে। গণতান্ত্রিক অধিকার ও অর্জিত সাফল্য রক্ষায় বামপন্থীদের আন্দোলন চলবে। একে দমানো যাবে না।” যে ভাবে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার উপর ‘আঘাত হানা’ হচ্ছে, এ দিনের সভায় সে নিয়েও মুখর হন ফ্রন্ট নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, পঞ্চায়েত ব্যবস্থা এ রাজ্যের গর্ব। এখন সেখানে ‘আমলাতন্ত্র’ কায়েমের চেষ্টা হচ্ছে।
তমলুকে লক্ষ্মণবাবুর সুরই ছিল সবচেয়ে উচ্চগ্রামে বাঁধা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ করে তিনি বলেন, “ওদের সন্ত্রাসের জবাব মানুষই দেবেন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.