দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
সংস্কার কবে
দুর্গম পুণ্য-যাত্রা
নৌকোর মতো দুলে দুলে চলছে পুণ্যার্থী বোঝাই ম্যাটাডর, ট্রাক ও ছোট বাস। কারণ, রাস্তার বেহাল অবস্থা। শুধু পুণ্যার্থীরাই নন, আশপাশের তিনটি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দাও এই রাস্তা ব্যবহার করেন। বাখরাহাট হাইস্কুলের মোড় থেকে বড়কাছারি পর্যন্ত বিস্তৃত বড়কাছারি রোডের কাছে পাঁচটি স্কুল রয়েছে। ফলে দুর্ভোগ হচ্ছে পড়ুয়াদেরও। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদকে একাধিক বার এই সমস্যার কথা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
সারা বছরই বড়কাছারিতে পুণ্যার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত। কয়েকটি জায়গায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়ে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। রাস্তা এতই সরু যে দু’টি গাড়ির পাশাপাশি যাওয়া রীতিমতো ঝুঁকির ব্যাপার। রাস্তার দু’পাশে রয়েছে অনেক জলাশয়। কিন্তু কোনও গার্ডওয়াল নেই।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষায় যাতায়াত করতে খুব অসুবিধা হয়। অন্য সময়ে ধুলোয় ভরে থাকে। এলাকার বাসিন্দা পিলে সিংহ বলেন, “বড়কাছারি যাওয়ার আরও একটি রাস্তা রয়েছে। কিন্তু খুব কম লোক সে রাস্তা ব্যবহার করেন। তাই এই রাস্তার উপরেই বেশি চাপ। কিন্তু কারও মাথাব্যথা নেই।” মঙ্গল ও শনিবার ভিড় বেশি হয়। এই দু’দিন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
বড়কাছারি রোডের বেহাল দশার জন্য ব্যাহত হচ্ছে বাখরাহাট রোডের যান চলাচলও। হাইস্কুল মোড়ে বড়কাছারি রোড বাখরাহাট রোডে মিশছে। অভিযোগ, এখানে যান নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেই। ভাঙাচোরা রাস্তার জন্য বড়কাছারি পৌঁছতে দীর্ঘ সময় লাগছে। ফলে হাইস্কুল মোড় থেকে বাখরাহাট রোডে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকছে। আটকে পড়ছে যাত্রিবাহী গাড়িও। বাখরাহাট চার নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের জয়ন্তী নস্কর বলেন, “রাস্তাটি জেলা পরিষদের। শুনেছি তারা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আবু তাহের সর্দারের কথায়: “খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”
মাকালিয়া, বাখরাহাট এবং ঝিকুরবেড়িয়া গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত এই রাস্তার উপরেই নির্ভরশীল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াই দায়। এলাকার আর এক বাসিন্দা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রামরাবণ পাল বলেন, “গ্রামের অনুষ্ঠানে এসে জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাসিন্দাদের সামনেই দ্রুত রাস্তা সারানো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও হাল ফিরল না।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের শামিমা শেখ অবশ্য বলেন, “বর্ষার জন্য এত দিন কাজ হয়নি। এ বার হবে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.