|
|
|
|
জোর করে খাতা কেড়ে নেওয়ায় অভিযুক্ত টিএমসিপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হরিপাল |
পরীক্ষার হলে ঢুকে ‘গার্ড’ দেওয়া এবং সময় শেষ হওয়ার আগে জোর করে পরীক্ষার্থীদের খাতা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল টিএমসিপি-র কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে হরিপালের বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ে। অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান পরীক্ষার্থীরা। হরিপাল থানাতেও লিখিত অভিযোগ করা হয়। কলেজের ছাত্র সংসদে ক্ষমতাসীন টিএমসিপি। তারা অভিযোগ মানেনি।
কলেজ সূত্রের খবর, গত ২১ তারিখ থেকে প্রাতর্বিভাগে বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ইউনিট পরীক্ষা চলছিল। শুক্রবার ছিল শেষ পরীক্ষা। এ দিন বাংলা এবং এডুকেশন পরীক্ষা ছিল। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সওয়া ৯টা পর্যন্ত বাংলা পরীক্ষা হয়। অভিযোগ, শিক্ষকদের সঙ্গে টিএমসিপি-র কিছু ছেলে ‘গার্ড’ দিতে থাকেন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আরম্ভ হয় এডুকেশন পরীক্ষা। পরীক্ষাটি শেষ হওয়ার কথা ছিল সকাল সওয়া ১০টায়। কিন্তু, তার প্রায় পঁচিশ মিনিট আগেই ওই ছেলেরা খাতা কেড়ে নেয় বলে পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, ওই দলে বহিরাগতেরাও ছিল। খাতা কেড়ে নেওয়া হলেও শিক্ষকেরা বাধা দেননি। উল্টে, পড়ুয়ারা প্রতিবাদ করায় ওই ছেলেরা তাঁদের হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ।
ঘটনার প্রতিবাদে দিবা বিভাগের সময় অধ্যক্ষের ঘরের সামনে জড়ো হন পরীক্ষার্থীরা। অধ্যক্ষ অসীমকুমার সামন্তের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন তাঁরা। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে অধ্যক্ষ প্রাতর্বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেন। পরে অধ্যক্ষ বলেন, “অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনটা ঘটে থাকলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীদের নিয়ে শনিবার বৈঠকে বসছি।” প্রাতর্বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক মৈনাককুমার দে অবশ্য বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকারাই গার্ড দিয়েছেন। কোনও ছাত্র গার্ড দেয়নি। নির্ধারিত সময়ের আগে খাতা কেড়ে নেওয়ারও কোনও ঘটনা ঘটেনি।”
যদিও, বিএ দ্বিতীয় বর্ষের একাধিক ছাত্রীর বক্তব্য, “কিছু ছেলে কলেজে দাপিয়ে বেড়ায়। তাদের কাছেই হেনস্থা হতে হল। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি আমরা। বাধ্য হয়ে পুলিশকে ঘটনার কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছি।” জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “পুলিশ অভিযোগ পেয়েছে। ঘটনার দিকে নজর রাখা হচ্ছে। সব দিক খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্নাকেও এ দিন বিষয়টি জানান অধ্যক্ষ। কলেজ সূত্রের খবর, শনিবার পুলিশ-প্রশাসনের কাছে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানো হবে কর্তৃপক্ষের তরফে।
সংগঠনের ছেলেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌম্যজিৎ মালিক বলেন, “মর্নিং বিভাগের ইন-চার্জ নিজের পছন্দমতো কয়েকটি ছেলেকে গার্ড দিতে নিয়ে যান শিক্ষক কম আসায়। দু’টি মেয়ে খাতা দেখাদেখি করছিল। ছেলেরা নিষেধ করে। না শোনায় তারা খাতা কেড়ে নেয়। তারা তো শিক্ষকের দায়িত্বই পালন করল। অথচ, এটাকেই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে।” সৌম্যজিতের বক্তব্য, “যারা গার্ড দিচ্ছিল, তাঁরা সাধারণ ছাত্র। আমাদের সংগঠনের নয়। তা ছাড়া, ওরা নিজেরা গার্ড দিতে যায়নি। স্যার নিজে নিয়ে গিয়েছিলেন। তা হলে দায়টা কার?” ছাত্র সংগঠনের নেতারা এ কথা বললেও তৃণমূল সূত্রেরই খবর, দলের যুব সংগঠনের প্রাক্তন এক নেতা বকলমে কলেজের যাবতীয় বিষয় দেখাশোনা করেন। তাঁর ‘উস্কানি’তেই এক দল ছেলে কলেজে অভব্য আচরণ করে বলে দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশও স্বীকার করেছেন। একই বক্তব্য কলেজ কর্তৃপক্ষেরও। |
|
|
|
|
|