নতুন কার্বি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও শান্তি নিয়ে সংশয়
ড়ো চুক্তির আট বছর পর স্বাক্ষরিত হল কার্বি চুক্তি। আজ দিল্লিতে, ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্র্যাটিক সলিডারিটি (ইউপিডিএস) সংগঠনের সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করল কেন্দ্র ও রাজ্য। চুক্তি র ফলে ভাঙতে চলেছে অসমের সবচেয়ে বড় জেলা কার্বি আংলং।
১৯৯৯ সালের মার্চ মাসে কার্বি ন্যাশনাল ভলান্টিয়র্স ও কার্বি পিপল্স ফ্রন্ট মিশে গিয়ে ইউপিডিএস-এর জন্ম। পৃথক কার্বি রাজ্যের জন্য আন্দোলন চালাচ্ছিল তারা। দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কিরি রংফার ১৯৯৯ সালে গ্রেফতার হন। ২০০২ সালে সংগঠনের সেনাধ্যক্ষ লং কুমারও মারা যান। সেই বছরই ইউপিডিএস কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করে। তবে কিছু সদস্য এই সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংগঠন ত্যাগ করে কেএনএলএনএফ নামে নতুন সংগঠন তৈরি করে। তবে তারাও গত বছর অস্ত্রসমর্পণ করেছে। শুরু হয়েছে শান্তি প্রক্রিয়া। বর্তমানে ইউপিডিএস-এর সভাপতি হলেন লংদার সিংনার ওরফে এইচ ই কাথার। হরেন সিংহ বে সাধারণ সম্পাদক।
কেন্দ্র তাদের স্পষ্ট করেই জানিয়েছিল, কোনওভাবেই পৃথক রাজ্য গড়া সম্ভব নয়। সেই মতো ইউপিডিএসও পরে রাজ্যের দাবি থেকে সরে এসে অতিরিক্ত ক্ষমতা-সহ স্বশাসিত পরিষদের দাবি জানায়। চুক্তির খুঁটিনাটি নিয়ে ত্রিপাক্ষিক সম্মতি মিলছিল না। গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দু’দফায়, চুক্তি স্বাক্ষরের দিন ঘোষণা হয়েও তা স্থগিত হয়ে যায়। বিস্তর আলোচনার পরে এই তিন পক্ষই চুক্তির বয়ানে সম্মত হওয়ায় আজ তা স্বাক্ষরিত হল।
আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম, মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। হাজির ছিলেন ইউপিডিএস চেয়ারম্যান লংদার সেংনার। ঠিক হয়েছে, কার্বি আংলং জেলাকে চারটি ভাগে ভাগ করে জানুয়ারি মাসে কার্বি আংলং অটোনমাস ট্রাইবাল কাউন্সিলের নির্বাচন হবে। সেখানে ৫০ জন সদস্যের মধ্যে ৪৪ জন নির্বাচিত হবেন। ছ’জন থাকবেন রাজ্যপালের মনোনীত সদস্য হিসেবে। আগামী ছ’মাসের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত ইউপিডিএস সংগঠন ভেঙে রাজনৈতিক দল গড়বে। ঠিক হয়েছে, ৩৯টি বিভাগের ক্ষমতা কেএএটিসির হাতে দেওয়া হবে। আগামী পাঁচ বছর ধরে, প্রতি বছর, কার্বি আংলং-এর উন্নয়নের জন্য ৭০ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ দেবে কেন্দ্র। কার্বি ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দিল্লি যাওয়ার আগে, সাধারণ সম্পাদক হরেন সিংহ বে জানিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা চুক্তি সই করলেও পৃথক রাজ্যের দাবি ছাড়ছেন না। আপাতত কেন্দ্রের শর্তে রাজি হলেও পৃথক সংগঠন গড়ে ‘গণতান্ত্রিক’ উপায়ে কার্বি রাজ্যের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবে ইউপিডিএস। উল্লেখ্য, কার্বি আংলং-এর একটি বড় অংশই কার্বি চুক্তি মানতে রাজি নয়। চুক্তির বিরোধিতা করে বুধবার থেকে ৩৬ ঘণ্টার কার্বি বন্ধ ডেকেছিল বোকাজান জেলা দাবি কমিটি। সেই সঙ্গে সার্বভৌম কার্বিভূমির জন্য কেপিএলটি সশস্ত্র সংগ্রাম চালাচ্ছেই। লেগে রয়েছে হত্যা, লুন্ঠন, তোলাবাজি। কার্যত পুরো কার্বি আংলং-এর হয়ে ইউপিডিএস, এককভাবে যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তা মোটেই ‘সর্বসম্মত’ নয়। তাই বড়ো চুক্তির মতোই, কার্বি চুক্তিও আপাতত শান্তি আনলেও, সন্ত্রাস ও অশান্তি এখনই নির্মূল করতে পারছে না। আজ চুক্তি পর্ব মেটার পরে চিদম্বরম বলেন, “আশা করি কার্বি আংলং-এ শান্তি ও সমৃদ্ধি আসবে। অসমে ডিএইচডির সঙ্গে আলোচনাও প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এনডিএফবির রঞ্জন দইমারি গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করবেন পি সি হালদার।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.