আদালতে শাস্তির নির্দেশ তো দেওয়া হলই। সঙ্গে সঙ্গে সেই শাস্তি কার্যকরও হয়ে গেল আদালতের মধ্যেই।
একটি স্কুলের সাত জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগ ছিল এক প্রাক্তন ছাত্রের বিরুদ্ধে। শুক্রবার মামলাটি আলিপুর আদালতে ওঠে। শাস্তি হিসেবে তখনই ওই প্রাক্তন ছাত্রকে তিন ঘণ্টা কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন বিচারক।
ঘটনা ২০০৭ সালের। ওই বছর এপ্রিলে ভবানীপুরের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক-সহ সাত জন
শিক্ষকের বিরুদ্ধে মারধর করে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে থানায় ডায়েরি করেন মায়াশঙ্কর ঝা নামে এক শিক্ষক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আলিপুরের চতুর্থ বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই মামলায় একটানা সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। সাক্ষ্য পর্ব চলে দিনের পর দিন।
এ দিন শুনানি চলার সময় অভিযোগকারীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে হাজির হন মণীশকুমার শর্মা নামে ওই প্রাক্তন ছাত্র। তাঁর দাবি ছিল, সেই সময় তিনি নবম শ্রেণিতে পড়তেন এবং ঘটনাটি ঘটেছিল তাঁর সামনেই। কিন্তু অভিযুক্তদের তরফে আইনজীবী শ্যামলকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেরায় শেষ পর্যন্ত প্রাক্তন ছাত্রটি ভেঙে পড়েন। জানান, ২০০৭ সালে তিনি মোটেই নবম শ্রেণিতে পড়তেন না। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। মণীশ এখন বিকম পড়েন।
সাক্ষী নিজেই এই তথ্য জানানোয় তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার দায়ে আইনে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে বলে আদালতে জানান শ্যামলবাবু। মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ছাত্রটি আদালতে মার্জনা ভিক্ষা করেন। ছাত্রটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিচারক সঞ্জীব রায় তাঁকে আদালতের মধ্যেই তিন ঘণ্টা কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশ দেন। বেগতিক দেখে অভিযোগকারী মায়াশঙ্কর আদালত থেকে সরে পড়েন। |