হাইকোর্টের নির্দেশে পাণ্ডা-রাজ শেষ হচ্ছে কালীঘাটে
কালীঘাট মন্দিরে পাণ্ডা-রাজ শেষ হল। এখন থেকে ভক্তেরা লাইন দিয়ে শুধুমাত্র মন্দির কমিটির নিযুক্ত ও সচিত্র পরিচয়পত্রধারী পূজারিকে দিয়ে পুজো দিতে পারবেন। পূজারি ও ভক্ত ছাড়া অন্য কেউ মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকতে পারবেন না। শুক্রবার কালীঘাট মন্দির নিয়ে জনস্বার্থের মামলার রায় দিতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
একই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, কালীঘাট মন্দিরের জাতীয় স্মারক কেন্দ্র হিসেবে মর্যাদা পাওয়া উচিত। ৩০০ বছরের প্রাচীন এই মন্দিরকে জাতীয় স্মারক করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ১৫ দিনের মধ্যে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াকে তাদের বক্তব্য হাইকোর্টে জানাতে হবে। রাজ্যে ১৩৬টি জাতীয় স্মারক রয়েছে। তার মধ্যে কলকাতায় ছ’টি। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর তপনজ্যোতি বৈদ্য জানান, কালীঘাট মন্দির জাতীয় স্মারক হলে এই মন্দিরের সংস্কার, উন্নয়ন এবং সমগ্র দেখভালের দায়িত্ব নেবে কেন্দ্রীয় সরকার। নিরাপত্তার প্রশ্নটিও থাকবে তাদের এক্তিয়ারে।
এ দিন শুনানির শুরুতেই রাজ্য সরকারের আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, কালীঘাট মন্দিরের অবস্থা এক সময়ের গয়ার থেকেও খারাপ। পাণ্ডা-রাজ চলছে। সেবায়েতরা পালা বিক্রি করায় যে কোনও ব্যক্তি মন্দিরের পুজোর দায়িত্ব পেয়ে যাচ্ছেন। ভক্তেরা যে পরিমাণ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার বিগ্রহকে দেন, তা মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার বা ভক্তদের কাজে লাগানো হয় না। সবই লুঠপাট হয়ে যায়।
মন্দির কমিটির তরফে একটি পুরনো হিসেবের নথি জমা দেওয়া হয়। ডিভিশন বেঞ্চ হালের হিসেব দেখাতে বলেছে। আবেদনকারীর তরফে বলা হয়, সেবায়েতদের পালা বিক্রির পথ ধরে মন্দিরে সমাজবিরোধীরা আশ্রয় পাচ্ছে। গর্ভগৃহে বিগ্রহকে স্পর্শ করিয়ে দেওয়ার জন্য যে যেমন পারে, টাকা নিচ্ছে। এ দিনও বিভিন্ন পক্ষ দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের কথা বারবার বলেন। পাণ্ডাহীন, দোকানহীন ভক্তসহায়ক ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ যদি তাঁরা তৈরি করতে পারেন, তা হলে কালীঘাটে তা হবে না কেন? প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, মন্দির কমিটি এজেন্সি নিয়োগ করে মন্দির ও প্রাঙ্গণ পরিচ্ছন্ন রাখবে। মন্দিরের ভিতরে নিরাপত্তার জন্যও এজেন্সি নিয়োগ করতে হবে। পুলিশ থাকবে। কোনও অপরাধমূলক কাজ হলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
এ দিন রাজ্য পর্যটন নিগমের তরফে বলা হয়, ২০০৫ সালে তারা কালীঘাট মন্দিরকে ঘিরে একটি পর্যটন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা নেয়। হাইকোর্ট নির্দেশও দেয়। কিন্তু তাদের অভিযোগ, মন্দির কমিটির সহায়তা মেলেনি। তাই আদালত অবমাননার মামলাও করা হয়েছে। রাজ্যের আইনজীবী বলেন, অর্থ অনেক সময়ে অনর্থের মূল। এই মন্দিরের আয়ের পরিমাণের জন্যই মন্দিরকে কেন্দ্র করে নানা স্বার্থচক্র গড়ে উঠেছে। ভক্তদের কথা ও নিরাপত্তার কথা কেউ ভাবছে না। বছরের পর বছর কেটে গেলেও মন্দির কমিটি কোনও কাজ করে না। হাইকোর্ট বিভিন্ন সময়ে নানা নির্দেশ দিলেও মন্দির কমিটি সে সব পালন করেনি। ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য জানায়, কালীঘাট মন্দিরের পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা ও মর্যাদা রক্ষায় হাইকোর্ট কোনও কড়া নির্দেশ দিতে পিছপা হবে না। ১৫ দিন পরে মামলাটির পুনরায় শুনানি হবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.