খুশি হলেও লগ্নির শর্ত নিয়ে সংশয়ে রিটেল বহুজাতিকগুলি |
দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে ভারতের ৪৫ হাজার কোটি ডলারের খুচরো ব্যবসার বাজার খুলে গিয়েছে বিশ্বের তাবড় রিটেল সংস্থার সামনে। ফলে স্বভাবতই খুশি ওয়ালমার্ট থেকে শুরু করে ক্যারফোর বা টেস্কোর মতো খুচরো ব্যবসার বিভিন্ন বহুজাতিক। কিন্তু একই সঙ্গে কিছুটা সংশয় ও আশঙ্কাও রয়ে যাচ্ছে তাদের মনে। কারণ ভারত সরকার বহু ব্র্যান্ডের পণ্যের খুচরো ব্যবসায় ৫১% এবং এক ব্র্যান্ডের পণ্যে ১০০% বিদেশি লগ্নিতে সায় দিলেও, সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে বেশ কিছু শর্তও। সেগুলি কোনও ভাবে তাদের লগ্নির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে কি না, সেটা নিয়েই চিন্তায় তারা। তাই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংস্থাগুলি এ সংক্রান্ত যাবতীয় শর্ত-সহ কেন্দ্রের নতুন বিদেশি লগ্নি নীতি খুঁটিয়ে পড়ে নিতে চায় বলে জানিয়ে দিয়েছে। |
প্রসঙ্গত, কৃষক বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য ওই লগ্নি অনুমোদনের সঙ্গে একগুচ্ছ শর্ত আরোপ করেছে কেন্দ্র। যেমন, যে সব শহরের জনসংখ্যা ১০ লক্ষের বেশি, সেখানেই এই ধরনের বিক্রয়কেন্দ্র খোলা যাবে। কৃষিজ পণ্য কেনার প্রথম অধিকার থাকবে সরকারেরই। বেসরকারি সংস্থাকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের থেকে অন্তত ৩০% পণ্য কিনতে হবে ইত্যাদি। আবার এক ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসার ক্ষেত্রেও কিছু শর্ত রাখা হয়েছে। যেমন, ন্যূনতম বিদেশি লগ্নির পরিমাণ হতে হবে অন্তত ১০ কোটি ডলার। বিদেশি বিনিয়োগের অন্তত অর্ধেক লগ্নি করতে হবে প্রক্রিয়াকরণ, গবেষণা, মান নিয়ন্ত্রণ, সংরক্ষণ কেন্দ্র, হিমঘরের মতো পরিষেবায়। টাটকা কৃষিজ পণ্য, ফল, শাকসব্জি, ফুল, শস্য, ডাল, ডিম, মাছ, মাংসের মতো পণ্য বিক্রি করা যাবে, কিন্তু কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি, বস্ত্র ক্ষেত্রে এবং ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে ইত্যাদি। আর এই ধরনের শর্তগুলি নিয়েই আপাতত চিন্তিত রিটেল বহুজাতিকগুলি। এই রকমই এক সংস্থার কর্তার দাবি, কেন্দ্রের আরোপিত শর্তের কয়েকটি যথেষ্ট কড়া। তাঁর মতে, এই ধরনের ব্যবসায় লগ্নির অঙ্ক বেশ বড়সড় হয়। সেই কারণে আগেই বিদেশি লগ্নির নীতি সংক্রান্ত সমস্ত খুঁটিনাটি না-জেনে এ বিষয় কোনও পদক্ষেপ করা উচিত হবে না একেবারেই।
ভারতের বাজারে পাইকারি ব্যবসার জন্য ভারতীর সঙ্গে আগেই জোট বেঁধেছে মার্কিন খুচরো ব্যবসা সংস্থা ওয়ালমার্ট। যদিও প্রথম থেকেই তাদের লক্ষ্য এ দেশের খুচরো ব্যবসার বাজার। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই ভারতী ওয়ালমার্টের সিইও রাজ জৈনও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তবে তাঁর সতর্ক মন্তব্য, “আগে যাবতীয় শর্ত খতিয়ে দেখব। তার পরই সিদ্ধান্ত নেব।” |