হস্টেল গড়তে জমি দান নিরক্ষর চাষির
স্কুলের হস্টেল গড়তে জমি দিলেন কেতুগ্রামের নিরক্ষর চাষি রমজান সরিফ।
পড়াশোনা করার বিশেষ সুযোগ পাননি তিনি। তাই এলাকার স্কুলের হস্টেল তৈরির জন্য জমি প্রয়োজন জেনে চুপ থাকতে পারেননি। স্বেচ্ছায় নিজের ২৫ শতক জমি কেতুগ্রামের স্যার আশুতোষ মেমোরিয়াল স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন। সরকারি ভাবে ওই জমির মূল্য ৫ লক্ষ টাকারও বেশি। মঙ্গলবার কেতুগ্রামের রেজিস্ট্রি অফিসে জমি হস্তান্তর হয়।
পেশায় কৃষক রমজানের বাড়ি কেতুগ্রামের দক্ষিণপাড়ায়। তিনি ও তাঁর স্ত্রী আরিফা বিবি দু’জনেই নিরক্ষর। স্যার আশুতোষ মেমোরিয়াল স্কুলের পিছন দিকে ২৫ শতক (সাড়ে ১২ কাটা) জায়গা কিনেছিলেন তিনি। স্কুলের উন্নয়নের স্বার্থে সেই জমিই দান করলেন তিনি। স্কুল সূত্রে খবর, রমজান সরিফ গত ১৭ নভেম্বর স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদককে চিঠি দিয়ে জমি দান করার কথা জানিয়েছিলেন।
রমজান সরিফ।
নিজস্ব চিত্র।
রমজান বলেন, “আমার ছেলে-মেয়েরা এই স্কুলেই পড়ে। জমির জন্য স্কুলের উন্নয়ন আটকে যেতে পারে, সেটা ভেবেই জমি দান করে দিলাম। আমি তো পড়াশোনা শিখিনি। আমার ন্যূনতম সাহায্যে যদি এলাকার পড়ুয়ারা শিক্ষিত হতে পারে, খুশি হব।” রমজানের ছেলে ও মেয়ে কেতুগ্রামের স্যার আশুতোষ মেমোরিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া।
স্কুলকে দান করা করা জমিতে এখনও ধান পড়ে রয়েছে। সেখানে দাঁড়িয়ে বছর পঁয়ত্রিশের রমজান বলেন, “এক সময় কেতুগ্রামে সাংসদ অধীর চৌধুরী কলেজ তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু না মেলায় কলেজ তৈরি করা যায়নি। এ বারও জমির অভাবে হস্টেল তৈরির টাকা এসেও ফেরত যেতে পারে শুনে স্কুল সম্পাদককে জমি দেব বলে চিঠি লিখি।”বাড়িতে কেউ আপত্তি করেননি রমজানের জবাব, “আপত্তি থাকলে কি আর জমি দান করা সম্ভব হত।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যালঘু ও মাদ্রাসা উন্নয়ন দফতর থেকে কেতুগ্রামের স্যার আশুতোষ মেমোরিয়াল স্কুলের হস্টেল তৈরির জন্য ২১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৫০০টাকা বরাদ্দ হয়। ইতিমধ্যেই ওই টাকা জেলা দফতরে চলে এসেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, হস্টেল তৈরির জন্য যে পরিমাণ জায়গা প্রয়োজন, তা আমাদের হাতে নেই। হস্টেলটিতে প্রাথমিকভাবে ৪০ জন পড়ুয়া থাকতে পারবেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণ সাধু বলেন, “জমি নিয়ে আমরা চিন্তায় ছিলান। রমজান সরিফ এগিয়ে আসায় আমরা কৃতজ্ঞ।” কেতুগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুন্সি তৈবুর রহমান বলেন, “আমরা গ্রামে জমি দেওয়ার জন্য প্রচার করছিলাম। রমজান তা জানতে পেরে আমাদের জমি দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।’’
রমজান সরিফের স্ত্রী আরিফা বিবি বলেন, “শিক্ষার সঙ্গে আমাদের নাম জড়িয়ে গেল। এটাই আমাদের কাছে সম্মানের। আশা করব স্কুলের উন্নয়ন ও শিক্ষার স্বার্থে অন্য গ্রামবাসীরাও এগিয়ে আসবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.