|
|
|
|
‘সন্ত্রাস’-এ দুর্বল সংগঠন, অভিযোগ |
সদস্য কমছে সিপিএমে |
অরিন্দম সাহা • কোচবিহার |
প্রয়োজনীয় সংখ্যক দলীয় সদস্য না পাওয়ায় বক্সিরহাটের ফলিমারি লোকাল কমিটি তুলে দিচ্ছে কোচবিহার জেলা সিপিএম। দলীয় সূত্রের খবর, এবার প্রতিটি লোকাল কমিটির জন্য নূন্যতম ৫০ জন সদস্য বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ জারি করেছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। ফলিমারি এলাকায় ওই সংখ্যক সদস্য মেলেনি। মাত্র ৪০ জন সদস্যপদ নবীকরণ করেছেন। তা ছাড়া একটি শাখা কমিটিও উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে নিরুপায় হয়ে জেলা নেতৃত্ব ফলিমারি লোকাল কমিটি তুলে দেওয়ার বিষয়ে বক্সিরহাট জোনাল কমিটির প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অখিল প্রামাণিক বলেন, “দলের নির্দেশিকা মেনে নির্দিষ্ট সদস্য সংখ্যায় পৌঁছাতে ওই এলাকায় কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। আমরা সেইজন্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ফলিমারি লোকাল কমিটিকে আমরা রামপুরের সঙ্গে যুক্ত করেছি। সদস্য সংখ্যা বাড়লে ভবিষ্যতে ফের ফলিমারি লোকাল কমিটি নতুন করে গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।” সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী অনন্ত রায় বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাস-সহ কিছু কারণে জেলার ১/২ টি ক্ষেত্রে লোকাল কমিটিগুলিতে যুক্ত করতে হচ্ছে।”
তুফানগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের আওতাধীন বক্সিরহাট জোনাল কমিটিতে ১১টি লোকাল কমিটি রয়েছে। এগুলি হল জোড়াই, রামপুর-২, মহিষকুচি ১ এবং ২, ভানুকুমারী ১ ও ২, শালবাড়ি ১ও ২, বারকোদালি ১ এবং ২,ফলিমারি। গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭টি আসনের ৪টিতে এককভাবে জয়ী হন সিপিএম প্রার্থীরা। দলের পঞ্চায়েত সদস্য প্রধানও হন। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পাশাপাশি তুফানগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থীরা। তার পর থেকেই সিপিএম থেকে সমর্থকদের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার হিড়িক বেড়েছে।
পঞ্চায়েতে এই তৃণমূলের ১টি আসন থাকলেও সিপিএমের ৩ জন এবং বিজেপি’র ২ জন যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬। প্রত্যাশামতই পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় এখন তৃণমূল। বক্সিরহাট জোনালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অখিলবাবু বলেন, “তৃণমূলের ভয়েই দলের অনেকেই প্রকাশ্যে আর দলীয় সদস্যপদ নবীকরণের সাহস পাচ্ছেন না। পরিস্থিতি কিছুটা ঠিক হলে ওই সদস্যরা ফের সদস্যপদ নবীকরণ করাবেন।” বক্সিরহাট জোনাল সম্পাদক ধনঞ্জয় রাভা বলেন, “নিয়ম অনুসারে সদস্য না হওয়ায় শুধু একটি লোকাল কমিটিকেই রামপুর-২ যুক্ত করতে হচ্ছে।”
পাশাপাশি, কোচবিহার দিনহাটা মহকুমার নাজিরহাট ১ এবং ২ নম্বর লোকাল কমিটিকেও মিশিয়ে একটি লোকাল কমিটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। দলের স্থানীয় নেতাদের দাবি, এই ক্ষেত্রে ভৌগলিক সমস্যার জন্য বামেদের দখলে থাকা দিনহাটা মহকুমা লোকাল কমিটি কমাতে হচ্ছে। এই বিষয়ে জেলা নেতৃত্ব সবুজ সংকেত দিয়েছেন। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর আরেক সদস্য বেণুবাদল চক্রবর্তী বলেন, “পুরোটাই সাংগঠনিক বিষয়। প্রয়োজনীয় সদস্য না হওয়ায় দুটি লোকালকে যুক্ত করা হচ্ছে। আর ভৌগলিক বিষয়কেও মাথায় রাখা হচ্ছে।” সিপিএম নেতারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে নালিশ তোলার প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সিপিএমের পায়ের তলার মাটি নেই। মানুষ আর সিপিএমকে বিশ্বাস করছেন না। কমিটি গড়ার লোক পাচ্ছে না সিপিএম। তাই নিজেদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ঢাকতে সিপিএম নেতারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে।” |
|
|
 |
|
|