বিষ্ণুপুরে ধৃত দুই ‘সিনিয়র’
সিগারেটের ছেঁকা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রকে
ফের র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল বিষ্ণুপুরের মল্লভূম ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)-তে। বারবার একই অভিযোগ ওঠায় এই বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কর্তৃপক্ষের উপরে ক্ষুব্ধ প্রশাসন।
অভিযোগ, রবিবার রাতে দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রকে হস্টেলের ছাদে মারধর করে সিগারেটের ছেঁকা দেন চতুর্থ বর্ষের দুই ছাত্র। তাঁকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পরে হস্টেলের ঘরে ফের তাঁকে মারধর করা হয়। দ্বৈপায়ন ঘোষ নামে আহত ওই ছাত্র বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিষ্ণুপুরের এসডিপিও নিজে হাসপাতালে গিয়ে ওই ছাত্রের বয়ানের ভিডিও রেকর্ডিং করেছেন। অভিযুক্ত দুই ছাত্র শান্তনু চৌধুরী ও পৃথ্বীজিৎ রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে তাদের কাছে ধৃতেরা র্যাগিংয়ের কথা কবুল করেছেন।
সোমবার কলেজ চত্বরে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রেরা। বিক্ষোভকারীদের উপরেও চড়াও হন চতুর্থ বর্ষের বেশ কয়েক জন পড়ুয়া। এক চিত্রসাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। এসডিপিও দিব্যজ্যোতি দাসের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ এবং এমআইটি-র ‘অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি’ পৃথক ভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির তদন্তে কতটা ফল মিলবে, তা নিয়ে সংশয়ে কলেজের ‘জুনিয়র’ ছাত্রছাত্রীরা। কারণ, এমআইটি-তে র্যাগিংয়ের ঘটনা নতুন নয়। অভিভাবক ও স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, র্যাগিংয়ের ঘটনায় দোষীদের যথেষ্ট ‘শাস্তি’ না হওয়ায় এই প্রবণতা কমানো যাচ্ছে না। ওই কলেজের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির অন্যতম সদস্য তথা বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “ওই কলেজের বিরুদ্ধে বারবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ আসছে। সরকারি নির্দেশ মেনে কমিটির মিটিং ঠিক সময়ে হয় না। এ বার প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।”
হাসপাতালে দ্বৈপায়ন ঘোষ। ছবি: শুভ্র মিত্র।
কলকাতার ঠাকুরপুকুর থানা এলাকার বাসিন্দা দ্বৈপায়ন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাবা, সিএসটিসি কর্মী প্রদীপকুমার ঘোষ এ দিন সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর পৌঁছন। তাঁর ক্ষোভ, “হাজার হাজার টাকা খরচ করে ছেলেকে এখানে পড়তে পাঠিয়েছি কি মরার জন্য? আমি মঙ্গলবার কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করব।”
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে দ্বৈপায়ন জানিয়েছেন, শান্তনু ও পৃথ্বীজিৎ ‘মদ্যপ’ অবস্থায় রবিবার রাত ১২টা নাগাদ তাঁকে হস্টেলের ছাদে নিয়ে গিয়ে চড়-থাপ্পড় মারেন, সিগারেটের ছেঁকাও দেন। উপর থেকে নীচে ফেলে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। হাসপাতালে এ দিন দ্বৈপায়ন বলেন, “কোনও রকমে ওদের হাত ছাড়িয়ে নিজের ঘরে আসি। রাত ২টো নাগাদ ফের ঘরে ঢুকে ওই দু’জন আমাকে মারধরের পাশাপাশি ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।”
এ দিন সকালে হাসপাতালে দ্বৈপায়নকে দেখতে যান এসডিপিও দিব্যজ্যোতিবাবু। ইতিমধ্যে গণ্ডগোলের খবর পেয়ে তিনি এমআইটি-তে যান। তিনি সরাসরি অধ্যক্ষকে বলেন, “আপনারা সরকারি নিয়মকানুন মানছেন না।” এসডিপিও-র কড়া সমালোচনায় অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন কলেজের অধ্যক্ষ শরণকুমার সান্যাল এবং অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির অন্য সদস্যেরা।
এসডিপিও প্রশ্ন করেন, নিয়মমতো কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে থানায় কেন র্যাগিংয়ের অভিযোগ করা হয়নি। অধ্যক্ষ বলেন, “একটা ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে পুলিশকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল।” এমআইটি-র অধিকর্তা ধূর্জটি বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা থেকে বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা দেখা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.