কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ ট্রাইব্যুনাল রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনগুলিকে এক তরফা ভাবে মাসুল সংশোধনের নির্দেশ দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করে ফেলেছে। তবে এই মাসুল কতটা বাড়বে, তা ঠিক করবে রাজ্যের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনই। সে ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার না চাইলেও এ রাজ্যেও বিদ্যুতের মাসুল বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হল।
রাজ্যের নতুন সরকার এখনও বিদ্যুতের মাসুল না-বাড়ানোর সিদ্ধান্তেই অটল। সে কারণেই রাজ্য তিনটি সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থাকে কমিশনের কাছে মাসুল বাড়ানোর প্রস্তাব পর্যন্ত পেশ করতে দেয়নি। এই অবস্থায় এ রাজ্যের তিনটি সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম, বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি এবং ডিপিএল চরম বিপাকে পড়ে।
শুধু বিদ্যুতের মাসুল নয়। জ্বালানির দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন মতো ‘ফুয়েল সারচার্জ’-ও একতরফা ভাবে বাড়ানোর জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রাইব্যুনাল। রাজ্যের বিদ্যুৎ সংস্থাগুলোর মধ্যে একমাত্র সিইএসসি কমিশনের কাছে মাসুল ও জ্বালানি সারচার্জ বাড়ানোর আবেদন করেছিল। ইতিমধ্যে এক বার জ্বালানি সারচার্জ বাড়িয়েছে তারা। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক সূত্রের খবর, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, একই ভাবে মাসুল বৃদ্ধি আটকে আছে অন্তত ২০টি রাজ্যে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মতো ওই সব রাজ্যের সরকারও বিদ্যুতের মাসুল বৃদ্ধির প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়নি। সব রাজ্যের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলির পুঞ্জীভূত লোকসান দাঁড়িয়েছে এক লক্ষ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতেই উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ ট্রাইব্যুনাল এগিয়ে এসেছে। ওই সব রাজ্যের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে মাসুল সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ দেন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এম কারপাগা বিনয়গম এবং কমিশনের দুই টেকনিক্যাল সদস্য ভি জে তলোয়ার এবং রাকেশ নাথ।
ট্রাইব্যুনালের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রতিটি আর্থিক বছরের ৩১ মার্চের মধ্যেই ঘোষণা করে দিতে হবে পরের বছরের সংশোধিত মাসুল হার। কোনও বিদ্যুৎ সংস্থা নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে মাসুল সংশোধনের আবেদন যদি জমা না-ও দেয়, এক মাস অপেক্ষা করে কমিশন নিজেই স্বতঃপ্রবৃত্ত ভাবে নতুন মাসুল ঘোষণার ব্যবস্থা করবে। কয়লা ও তেলের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি মাসেই ফুয়েল সারচার্জ স্থির করে দেবে কমিশন। |