উত্তর কলকাতা
অবশেষে সুরাহা
নিকাশি চালু
ত্তর কলকাতার বেলগাছিয়া এবং দত্তবাগান এলাকার জল নিকাশির সমস্যা মিটতে চলেছে।
রাজা মণীন্দ্র রোড-সহ দত্তবাগান এবং মিল্ক কলোনি অঞ্চলে এখন অল্প বৃষ্টিতেই জল দাঁড়িয়ে যায়। জল বেরোতেও অনেক সময় লাগে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পে শক্তিশালী পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা পুরসভা। প্রকল্প রূপায়ণের জন্য পুর-কর্তৃপক্ষ জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর থেকে পাম্পিং স্টেশন অধিগ্রহণ করে। কিন্তু পাম্পিং স্টেশনে বিদ্যুৎ-সংযোগ না থাকায় এই প্রকল্প রূপায়ণ সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে পুরসভার হস্তক্ষেপে এই সমস্যার সমাধান হল।
পুরসভার নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ রাজীব দেব বলেন, “এই অঞ্চলে জল জমার সমস্যা বহু দিনের। জমা জল দ্রুত নিষ্কাশনে শক্তিশালী পাম্পেরও অভাব ছিল। পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় পাম্প বসালেও তা অচল ছিল। সম্প্রতি সে সব সমস্যার সমাধান হয়েছে। পাম্প চলছে। আশা করা যায়, আগামী বর্ষায় এ অঞ্চলে জল জমার সমস্যা কমে যাবে।”
অগস্ট ২০১১। এই অবস্থা কি এ বার বদলাবে?
এলাকার বাসিন্দারা সমস্যাটি নিয়ে পুরকর্তৃপক্ষের কাছে অনেক অভিযোগ জানিয়েছেন। গত পুরবোর্ডের আমলেই পুরকর্তৃপক্ষ কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্প-র (কেইআইপি) অধীনে এখানে পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু তা কার্যকরী হয়নি। এ বছরের প্রথম দিকে পাম্প বসানোর কাজ হলেও পাম্পে বিদ্যুৎসংযোগ না থাকায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছিল না।
পুরকর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর পুরসভাকে এই পাম্পিং স্টেশন হস্তান্তর করতে চাইলেও পাম্পের জন্য বিদ্যুতের বিল কে মেটাবে তা নিয়েই দুই দফতরে মতবিরোধ ছিল। রাজীববাবু জানান, আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, অগস্টের পরে পাম্প চালানোর জন্য বিদ্যুতের যাবতীয় খরচ পুরসভা সিইএসসি-কে দেবে। কিন্তু হস্তান্তরের আগে এই পাম্পিং স্টেশনের যে বিল বকেয়া ছিল তা সংশ্লিষ্ট দফতর সিইএসসি-কে দেবে বলে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর কর্তৃপক্ষ পুরসভাকে জানান।
কলকাতা পুরসভার ১ নম্বর বরোর অন্তর্ভুক্ত ৩, ৪ এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জল মূলত জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাম্পিং স্টেশনের পাম্পের মাধ্যমে যেত। এই স্টেশনে মোট পাঁচটি পাম্প ছিল। সেগুলির মাধ্যমে জল বাগজোলা খাল হয়ে সরাসরি কেষ্টপুর খালে পড়ে।
কেইআইপি-র আধিকারিকেরা এই পাম্পিং স্টেশনের সমীক্ষা করেন। প্রকল্পের অধিকর্তা সৌম্য গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “দত্তবাগানে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাঁচটি পাম্পের মাধ্যমে জল বেরোত। কিন্তু জমা জলের সবটা বার করার ক্ষমতা এই পাম্পগুলির ছিল না। তাই বেশি ক্ষমতার তিনটি পাম্প বসানো হয়েছে। শুধু জমা জল নিষ্কাশনের জন্য একটি নিকাশি নালাও তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়াও, শুধু দূষিত জল নিষ্কাশনের জন্য আরও তিনটি পাম্প বসানো হয়েছে।
ফলে, এলাকার জল জমার সমস্যার অনেক উন্নতি হবে। বেলগাছিয়ায় পরেশনাথ মন্দিরেও জল জমে থাকবে না।”
কেইআইপি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাঁচটি পাম্পের মাধ্যমে বৃষ্টির জল ছাড়াও এলাকার নিকাশির জল বার করা হত। বর্তমানে, বৃষ্টির জমা জল বার করার জন্য এই তিনটি পাম্প ব্যবহার করা হবে। বাকি পাম্পগুলির মাধ্যমে সব সময়েই নিকাশির জল বার করা যাবে। এই নিকাশির জল কাছেই বাঙ্গুরে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে পরিশোধিত হয়ে বাগজোলা খালে পড়বে।
পুরসভার এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, “এই পাম্প বসানোর ফলে এলাকার জল জমার সমস্যার সমাধান হবে। দত্তবাগানের সঙ্গে বীরপাড়া পাম্পিং স্টেশনেও কেইআইপি প্রকল্পে তিনটি নতুন পাম্প বসানো হয়েছে। তবে তার বিদ্যুৎসংযোগ এখনও হয়নি। অন্য দিকে, লালাবাবু নিকাশি নালা এবং বাগজোলা খালের সংযোগস্থলে আরও একটি পাম্প বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে।
এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই এলাকায় জমা জলের দ্রুত নিষ্কাশন হবে।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.