স্বর্ণযুগে
স্মৃতির পথে
সুরের স্মৃতি যে এ ভাবে জীবন্ত হয়ে উঠতে পারে তা বুঝি সেই স্বর্ণালি সন্ধ্যায় হাজির না থাকলে বোঝা যেত না। বাসন্তী বিদ্যাবীথির আয়োজনে সে সন্ধ্যা আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠেছিল ‘স্বর্ণালি’, কারণ বাংলা গানের স্বর্ণযুগ সেই সন্ধ্যায় যেন অভিনীত হল চোখের সামনে। সানাইয়ে বাংলা আধুনিক গানের সুর বাজিয়ে অনুষ্ঠানের মূল সুরটি বেঁধে দিয়েছিলেন আলি আহমেদ হোসেন। কৌশিকী চক্রবর্তী দেশিকানের ‘মাঙ্গলিকী’র পরে সিডিতে যখন বেজে উঠল ‘কোনও এক গাঁয়ের বধূ’, তখন মনে হল যেন জন্ম নিচ্ছে ঐতিহাসিক গানটি। কারণ, গানটি বাজছিল তারই স্রষ্টা সলিল চৌধুরীর কণ্ঠে। সিডির সঙ্গে কণ্ঠ মেলালেন সলিল-কন্যা অন্তরাও। অনুপ ঘোষাল গাইলেন সলিল চৌধুরীর সেই ‘এমনি চিরদিন তো যাবে না’। গান ছাড়াও সলিল চৌধুরী অন্য ভাবে উঠে এলেন তাঁর সেই তীব্র ‘ছড়ার ছড়ি’ নিয়ে, পার্থ ঘোষের কণ্ঠে।
গানে গল্পে দেবাশিস বসু, হৈমন্তী শুক্ল, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, চন্দ্রাবলী রুদ্রদত্ত,
অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, অম্তরা চৌধুরী, পার্থ ঘোষ, অনুপ ঘোষাল, শমীক পাল প্রমুখ।
সম্প্রতি সোনারপুরে বাসন্তী বিদ্যাবীথির অনুষ্ঠানে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
আর এক স্মরণীয় মুহূর্তে, হৈমন্তী শুক্ল যখন গাইছেন সেই চিরপরিচিত ‘এখনও সারেঙ্গিটা বাজছে...’, তাঁকে রীতিমতো কাছে বসে পরামর্শ দিচ্ছেন গানটির সুরকার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই আবহাওয়ায় চুরাশিতে দাঁড়িয়েও অবিকল সেই তরুণ বয়সের মতো দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় গেয়ে উঠলেন ‘শ্যামলবরণী ওগো কন্যা’। মাঝে মাঝেই গান-গল্পের সূত্র ধরিয়ে দিচ্ছিলেন সঞ্চালক দেবাশিস বসু। সুরের স্মৃতি ছড়িয়ে পড়ল নতুন প্রজন্মের চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত ও শমীক পালের গানেও। অনুষ্ঠানের প্রথমেই শোকজ্ঞাপন হয়েছিল ভূপেন হাজরিকার মৃত্যুতে। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছাজ্ঞাপন করেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন পরিবেশমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার, সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার, মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার, শিল্পী শুভাপ্রসন্ন প্রমুখ। সোনারপুরের মিশনপল্লিতে বাসন্তী বিদ্যাবীথির কর্ণধার সুদীপ সেনের বাগানবাড়ি এ ভাবেই সাক্ষী থাকল এক শনিবারের সোনাঝরা সুর-সন্ধ্যার।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.