|
|
|
|
তুফানগঞ্জ |
সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ, জখম ৭ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
রবিবার নাটাবাড়ির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তমসের আলির বাড়িতে গিয়ে তাঁকে বুকে জড়িয়ে রাজনৈতিক সৌজন্যের নজির গড়েছিলেন এলাকার বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তার ২৪ ঘণ্টার মাথায় সোমবার সকালে তুফানগঞ্জের দেওচড়াই গ্রামে সিপিএম-তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হল। ওই ঘটনায় দু’পক্ষের অন্তত ৭ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “দু’পক্ষের বাদানুবাদ থেকে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। গোলমালের জেরে কয়েকজন সামান্য জখম হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
এই সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এ দিন দলের দেওচড়াই অঞ্চল কমিটি এবং যুব শাখা কমিটি ভেঙে দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “নতুন কমিটি গঠনের জন্য এ দিন কমিটি দু’টি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই নয়া কমিটি গড়া হবে। এলাকায় রাজনৈতিক সম্প্রীতি বজায় রাখার উপরে সকলকেই জোর দিতে হবে। দলের সকলকে সে কথা বোঝানো হয়েছে।”
নাটাবাড়ির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তমসের আলির অভিযোগ, ছক কষেই হামলা করেছেন তৃণমূলের একাংশ। তাঁর অভিযোগ, “নভেম্বর বিপ্লব দিবস পালনের আয়োজন ভেস্তে দিতে এই ছক। সে জন্য তৃণমূলের একাংশ তাঁদের দলীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, এমন রটিয়ে আমাদের লোকজনের উপরে হামলা চালিয়ে পাঁচ জনকে জখম করেছে। তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সমস্ত ঘটনা জানিয়েছি।”পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে দেওচড়াই বাজার লাগোয়া সিপিএম অফিসে নভেম্বর বিপ্লব দিবস পালনের জন্য কর্মী-সমর্থকেরা ভিড় করেন। ওই অফিস লাগোয়া দোকানের উপরে থাকা ঘাসফুলের তেরঙ্গা পতাকা খুলে ফেলা হয় বলে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ। তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে দুই দলের কর্মীরা মারপিটে জড়িয়ে পড়েন।
সিপিএমের অভিযোগ, দলের দেওচড়াই লোকাল কমিটির সম্পাদক-সহ তিন জনকে তৃণমূল সমর্থকেরা আটকে রাখেন। তুফানগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ বাহিনী তাঁদের উদ্ধার করে। তৃণমূলের দেওচড়াই এলাকার যুব নেতা মলয় দাস সিপিএম এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “দলীয় কর্মসূচি পালনের নামে জড়ো হয়ে সিপিএম সমর্থকেরা আমাদের পতাকা ছিঁড়ে ফেলেন। ঘটনার প্রতিবাদ জানালে ওরা হামলা চালায়। দু’জন কর্মীকে জখম করে।” দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য সিপিএম কর্মী ও সমর্থকদের একাংশ এসব করছেন।”
তবে মুখে যাই বলুন না কেন, ঘটনায় কর্মীদের একাংশের আচরণে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ। দলীয় সূত্রের খবর, এলাকায় শান্তি ফেরাতে রবিবার সিপিএম বিধায়কের বাড়িতে গেলে দলের জেলা সভাপতির সামনেই কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। সম্প্রতি দলের দখলে থাকা দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে বিধি ভেঙে জলের দামে ৪২টি গাছ বিক্রির অভিযোগও উঠেছিল। জেলা সভাপতির হস্তক্ষেপে ওই নিলাম বাতিল হয়। সোমবারের ঘটনায় দলীয় কর্মীদের কড়া বার্তা দিতেই অঞ্চল কমিটি ভাঙা হল বলে জেলা তৃণমূলের এক নেতা জানিয়েছেন। |
|
|
|
|
|