চিকিৎসক নিগ্রহের অভিযোগে ধৃত প্রৌঢ়া
গাফিলতির নালিশ, তুলকালাম
প্রসূতির গাফিলতির অভিযোগে হাসপাতালের মধ্যেই এক চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগে এক প্রৌঢ়া সহ ৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম আরতি দত্ত, গুড্ডু দত্ত ও বিচিত্র পাল। হাসপাতালের চিকিৎসক তপনকুমার বাগানির অভিযোগ, তিনি প্রসূতির চিকিৎসা ঠিকঠাক করা সত্ত্বেও মিথ্যে অভিযোগ তুলে তাঁকে মারধর করা হয়। তাঁকে বাঁচাতে তাঁর স্ত্রী তথা চিকিৎসক মালবিকা দেবী, একজন স্বাস্থ্যকর্মীও নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পরে তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। আরতি দেবীদের পক্ষ থেকেও পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে। আরতি দেবীর অভিযোগ, ওই চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসার ব্যাপারে জানতে চাইলে ভাল করে কথা না-বলে আচমকা তাঁর চুলের মুঠি ধরে মারেন। তখন বাড়ির লোকজন ঠেকাতে গেলে তাঁদেরও নিগ্রহ করা হয় বলেও আরতি দেবীর অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতালের চিকিৎসকের অভিযোগ ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। পাল্টা অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে গেলে হায়দরপাড়ার বাসিন্দা প্রসূতি রেণু দত্ত তপনবাবুর অধীনে ভর্তি হন। রোগিণীর পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসার ব্যাপারে পরিষ্কার করে কোনও কিছু বলছেন না তপনবাবু। একবার বলছেন গর্ভ স্বাভাবিক নয়, টিউমার হয়েছে। একবার বলছেন, ক্যান্সার হতে চলেছে। তাঁর কাছে চিকিৎসা না করলে আর কেউ ভাল করতে পারবে না। রোগিণীকে এসব ভলে ভয় দেখাচ্ছেন। তা বলতে গেলেই তিনি খারাপ ব্যবহার করেন রোগিণীর আত্মীয়দের সঙ্গে। তাঁরা অন্যত্র চিকিৎসা করাবেন বলে ছুটি চাইলে তিনি রোগিণীর চিকিৎসা সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রেসক্রিপশনে লিখে দিতে চাইছিলেন না। কেন লিখে দেবেন না জানতে চাইলে রোগিণীর এক আত্মীয়ার চুলের মুঠি ধরে মেঝেতে ফেলে দেন বলে অভিযোগ।
তপনবাবু বলেন, “ওই প্রসূতির গর্ভ স্বাভাবিক নয়। তাই অস্ত্রোপচার করতে হবে। রোগীর অবস্থা দেখে আমিই রোগিণীকে ভর্তি করাই। কী চিকিৎসা করা হচ্ছে জানতে চেয়ে এ দিন রোগিণীর লোকজন জেরা করতে শুরু করে। অন্যত্র নিয়ে যেতে চাইলে রেফার করেও দিয়েছি। অথচ তাঁদের এক মহিলা আমার গায়ে হাত দিয়ে ঘুষি মারার চেষ্টা করেন। আমার স্ত্রী আটকাতে গেলে তাঁর গলা চেপে ধরে। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।” তপনবাবুর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ ভিত্তিহীন। গোলমালের সময় রোগিণীর আত্মীয়া এক মহিলাকে শান্ত করতে তাঁকে ধরে চেয়ারে বসাতে গেলে তিনি পড়ে যান। মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়। রোগীর পরিবারের সঙ্গে চিকিৎসকদের এই গোলমালের ঘটনায় অস্বস্তিতে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবীর ভৌমিক বলেন, “এমন ঘটনা অনভিপ্রেত। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখছি।” প্রসূতি রেণুদেবীর আত্মীয়া রুনা দত্ত বলেন, “চিকিৎসক রোগিণীকে বারবার বলছেন তাঁর কাছে চিকিৎসা করালেই বাঁচবেন। অন্য কেউ তাকে বাঁচাতে পারবে না বলে ভয় দেখাচ্ছেন। অন্যত্র রেফার করতে বললেও কী ওষুধ এতদিন দিয়েছেন লিখে দিচ্ছেন না। রোগিণীর কী হয়েছে জানতে চাইলে আমি কতদূর পড়াশোনা করেছি, তাঁর কথা বুঝতে পারব কি না জানতে চেয়ে দুর্ব্যবহার করেন। প্রতিবাদ করলে আমাদের এক আত্মীয়ার চুলের মুঠি ধরে মেঝেতে ফেলে দেন।” এই ঘটনার সময় উপস্থিত অপর রোগিণীর আত্মীয়া চপলা অধিকারীর জানান, রুনাদেবীরা ঠিকই বলছেন। ওই চিকিৎসকই ঠিক মতো তথ্য দিচ্ছেলেন না। চুলের মুঠি ধরে রুনাদেবীর আত্মীয়াকে মেঝেতে ফেলে দেন। একজন মহিলার গায়ে হাত দেওয়ার জন্য তিনিও প্রতিবাদ করেছেন। হাসপাতালের সুপার রণজিৎ ভকত অবশ্য দাবি করেন, চিকিৎসক কাউকে মারধর করেননি। রোগীর লোকজনই চিকিৎসকদের গায়ে হাত তোলেন। এক মহিলা স্বাস্থ্য কর্মী ঠেকাতে গেলে তিনিও প্রহৃত হন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.