রাজ্য জুড়ে একশো দিনের কাজের প্রকল্প তেমন গতি না পেলেও এই প্রকল্পকেই কাজে লাগিয়েই এলাকার হতশ্রী চেহারা ফেরাতে উদ্যোগী হল করিমপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বেশ কিছু কাজের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে এই মুহূতের্র্ প্রথম ও প্রধান কাজ হল যত দ্রুত সম্ভব করিমপুরের বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার হাল ফেরানো। দিন কয়েকের মধ্যে পুরোদমে কাজও শুরু হয়ে যাবে বলে আশ্বাস পঞ্চায়েতের। সমস্ত কাজটাই হবে মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ রোজগার যোজনার টাকায়। পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান কংগ্রেসের তারক সরখেল বলেন, ‘‘এলাকার অন্যতম বড় সমস্যা বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা। অল্প বৃষ্টিতেই নাকাল হতে হয় সাধারণ মানুষকে। নিকাশি ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে আমরা প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছিলাম। ইতিমধ্যে আমরা ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের ২৪ লক্ষ ৭৪ হাজার ৫০০ টাকা পেয়েছি। কয়েক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। পরে বাকি টাকা পেলে আগামী বর্ষা থেকে করিমপুরে নিকাশি সমস্যাটা আর থাকবে না বলেই মনে করছি।’’ |
অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে যাওয়া করিমপুরের চেনা চিত্র। করিমপুর হাসপাতালে, থানা, বাসস্ট্যান্ডে এমনকী পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় সবকটি গ্রাম সংসদই চলে যায় কম বেশি জলের তলায়। ফলে প্রতি বর্ষায় হয়রান হতে হয় সাধারণ মানুষকে। বৃষ্টি থেমে গেলেও বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার কারণে বেশ কয়েক দিন ধরে জল জমে থাকে এলাকায়। তার সঙ্গে জড়ো হয় যাবতীয় আবর্জনা। জল-কাদা পেরিয়েই যাতায়াত করতে হয় এলাকার মানুষকে। বাসস্ট্যান্ড ও বাজার এলাকাগুলোতে জল জমায় সমস্যায় পড়তে হয় বাস কর্মী ও ব্যবসায়ীদেরও।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, নিকাশি ব্যবস্থার যাবতীয় পরিকল্পনা ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে করানো হয়ে গিয়েছে। তারকবাবুর কথায়, ‘‘করিমপুরের যানজট এড়াতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে নদীর পাশ দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে সেই রাস্তাকে বাইপাস হিসাবে ব্যবহার করলে যানজট অনেকটা এড়ানো যাবে। বর্ষার জন্য আমরা এত দিন সে ভাবে কাজ করতে পারিনি। এ বার ওই রাস্তার কাজও শুরু হবে। জল কমে গেলে ১০০ দিনের প্রকল্পে শুরু হবে নদী সংস্কারের কাজও। আশা করা যায় আগামী এক বছরের মধ্যে করিমপুরের চেনা চিত্রটা অনেকটাই বদলে যাবে।’’
তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজে গতি আনতে মহকুমার সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠক করা হয়েছে। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার রাস্তাঘাট কিংবা নিকাশির মত সমস্যাগুলির সমাধান করার কথা প্রধানদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। করিমপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত যেমন ইতিমধ্যে টাকাও পেয়ে গিয়েছে। নদী সংস্কারের বিষয়েও পঞ্চায়েতগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। টাকার অভাব নেই। দরকার শুধু উদ্যোগের। পঞ্চায়েতগুলো ঠিক মতো পরিকল্পনা করে কাজের উদ্যোগ করলে এক দিকে যেমন এলাকার বহু সমস্যার সমাধান হয় তেমনি এই প্রকল্পের কাজে গতিও আসে।’’ |