দু’বছর আগে চালু হয়েছে স্কুল। পঞ্চম থেকে অষ্টম, চার শ্রেণির পড়াশোনা চালানোর জন্য রয়েছে মাত্র দু’টি ক্লাসঘর। জল নেই, বিদ্যুৎ নেই, চেয়ার-বেঞ্চও নেই। এমন অবস্থাতেই চলছে জামুড়িয়ার কেন্দা জুনিয়র হাইস্কুল।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে সর্বশিক্ষা অভিযানের তরফে দেওয়া প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকায় গড়ে ওঠে কেন্দা হিন্দি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়। সেই টাকায় তৈরি হয় দু’টি ক্লাসঘর। সেই দু’টি ঘরে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ক্লাস হয়। পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস হয় বারান্দায়। ইস্ট কেন্দা গোঁসাই মন্দিরের কাছে এই স্কুলে নেই কোনও পাঁচিল। জল, শৌচাগার, বিদ্যুৎ কিছুই নেই। এমনকী রান্নাঘর না থাকায় মিড-ডে মিল এখনও শুরুই করা যায়নি। চারটি শ্রেণির দেখাশোনা করার জন্য রয়েছেন তিন জন শিক্ষক। ভূগোলের শিক্ষক অভিজিৎ সরকার জানান, নিজের বিষয়ের পাশাপাশি তাঁকে ইতিহাস, বাংলার ক্লাস নিতে হয়। ইংরাজির শিক্ষককে হিন্দিও পড়াতে হয়। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিনয়কুমার যাদব বিজ্ঞান পড়ান। তিনি জানান, এ সব সত্ত্বেও সমস্যা মিটছে না। বিনয়বাবুর কথায়, “মাত্র তিন জন শিক্ষক থাকায় প্রতি পিরিয়ডে একটি করে শ্রেণির পড়াশোনা বন্ধ রেখে কাজ করতে হয়। এ ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় নেই।” |
স্কুলের ছাত্র সামসের আনসারি, শমি পাসোয়ান, ছাত্রী জুবেদা খাতুনদের কথায়, “জল না থাকায় মাঝেমধ্যেই সমস্যায় পড়ি আমরা। গরমকালে জল ও বিদ্যুতের অভাবে নাজেহাল হই সকলেই।” স্কুলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের বসার জন্য কোনও বেঞ্চ নেই। প্রত্যেকে বাড়ি থেকে চটের বস্তা নিয়ে স্কুলে আসে। তাতে বসেই পড়াশোনা করতে হয় তাদের।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিনয়বাবু জানান, স্কুলে চারটি শ্রেণি মিলিয়ে মোট ১৫৪ জন পড়ুয়া রয়েছে। কোনও সুযোগ-সুবিধা না থাকায় আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা ছেলেমেয়েদের এই স্কুলে না পাঠিয়ে অন্যত্র পড়তে পাঠান বলে দাবি তাঁর। তিনি আরও জানান, স্কুল পরিদর্শককে শিক্ষক নিয়োগ-সহ স্কুলে বিভিন্ন পরিষেবার উন্নয়নের আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু এ নিয়ে এখনও কোনও প্রতিকার মেলেনি। জামুড়িয়া চক্র ২-এর বিদ্যালয় অবর পরিদর্শক কাজী নুর আলির অবশ্য আশ্বাস, “সর্বশিক্ষা অভিযান থেকে ওই স্কুলের জন্য আরও প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। শীঘ্রই উন্নয়নমূলক কাজকর্ম হবে।” |