নতুন ভবনে ফাটল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভাঙাচোরা বাড়িতেই
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন তৈরি হয়েছে বছর দু’য়েক আগে। কিন্তু তৈরির পর থেকেই দেওয়াল জুড়ে বড় বড় ফাটল। ফলে চালুই করা যায়নি লাখুড়িয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন।
মঙ্গলকোটের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেক্ষেত্রে পরিষেবা পেতেন প্রসূতিরা। চালু হত শয্যা। চব্বিশ ঘণ্টাই চিকিৎসা পেতেন এলাকার ১২টি গ্রাম এবং বীরভূমের নানুর থানার তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়। ভবন তৈরি থেকে রং করা পর্যন্ত সমস্ত কাজই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার শেষ করেছিলেন বছর খানেকের মধ্যে। সেই ঘরে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগও। কিন্তু মঙ্গলকোট ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে বাড়িটি হস্তান্তরিত করার ঠিক আগে চোখে পড়ে, ঘরের ভিতরে দেওয়ালে চিড়। সেই চিড় এখন ফাটলে পরিণত।
ফলে পুরনো ভাঙাচোরা বাড়িতেই চলছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। হতাশ গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির অবস্থা খুব খারাপ। শুধু বহির্বিভাগ চলে।” একটি ঘরে ঠাসাঠাসি করে দু’জন চিকিৎসক রোগী দেখছেন, এমন দৃশ্য হামেশাই দেখা যায়। রোগীদের আরও অভিযোগ, সাপের বাসাও রয়েছে ভগ্নপ্রায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
নিজস্ব চিত্র।
অথচ, প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে যখন নতুন ভবন তৈরি হয়েছিল, এলাকার বাসিন্দারা তখন ভেবেছিলেন, এ বার হয়তো সুদিন ফিরছে। কিন্তু ভবন তৈরিই সার। শেষমেশ ৩০০ জনের সই সংগ্রহ করে জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে নতুন ভবন সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এক বাসিন্দা তথা হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক অরূপ গোস্বামীর ক্ষোভ, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন তৈরি হয়েও কোনও লাভ হল না।”
রথতলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হয়েছিল সাতের দশকের গোড়ায়। বাঁশের খুঁটি ও খড়ের চালে তখন ৬টি শয্যা নিয়েই স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলত। ৭৫-৭৭ সালে কয়েক একর জায়গায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বাড়ে। তৈরি হয় কর্মীদের আবাসন। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে হাসপাতালটাই কার্যত উঠে গিয়েছিল। দীর্ঘ সময় চিকিৎসক ছিলেন না। কর্মী ও নার্সদের সংখ্যা কমতে থাকে। দু’হাজার সালে বন্যার পর ফাঁকা আবাসন দখল হয়ে যায়। কখনও ফার্মাসিস্ট, কখনও ব্লক থেকে চিকিৎসক এনে বহির্বিভাগ চালানো হত। সবে বছর কয়েক আগে নতুন চিকিৎসক দেওয়া হয়। ঠিক হয়, অন্তর্বিভাগ চালু হবে। জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য কর্মসূচির মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের খোল-নলচে বদলানোর সিদ্ধান্ত হয়। তখনই জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে লাখুড়িয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য মহম্মদ বদরুদ্দোজা (সিপিএম) বলেন, “প্রযুক্তিগত বিষয়টি জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার বলতে পারবেন। তবে ঠিকদারকে সম্ভবত কোনও টাকা দেওয়া হয়নি।” জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার অবশ্য কিছু বলতে চাননি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে মাটি পরীক্ষা করানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলে সিদ্ধান্ত হবে।”
এই মাটি পরীক্ষা আগে হয়নি কেন, তা নিয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.