চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে জঙ্গলমহলের ২০ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আনতে উদ্যোগী হল জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর। পুকুর খনন, ‘চেক ড্যাম’ তৈরির মাধ্যমেই এই প্রকল্প রূপায়িত হবে বলে মেদিনীপুরে এক প্রশাসনিক বৈঠকে আশ্বাস দিয়েছেন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তাঁর কথায়, “পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। এ ক্ষেত্রে বিধায়কদেরও সহযোগিতা চেয়েছি।” সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বিনপুরের সিপিএম বিধায়ক দিবাকর হাঁসদা বলেন, “আমরা চাই যতটুকু কাজ হবে, তা যেন ভাল ভাবে হয়। সাধারণ মানুষ যেন উপকৃত হতে পারেন।”
‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পের নানা দিক খতিয়ে দেখতে শনিবার মেদিনীপুরে আসেন মন্ত্রী। বিকেলে সার্কিট হাউসে প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শুভাঞ্জন দাস, পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি-সহ বিভাগীয় আধিকারিকেরা। ছিলেন জেলার বিধায়করাও। তবে সকলে আসেননি। |
মেদিনীপুরে বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী তথা ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা, মৃগেন মাইতি, রাধাকান্ত মাইতি, শ্রীকান্ত মাহাতো, শঙ্কর দোলইয়ের মতো তৃণমূল বিধায়কের পাশাপাশি সিপিএম বিধায়ক দিবাকর হাঁসদা ও কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর ভাই বিকাশ উপস্থিত ছিলেন। সিপিএমের কেউ বৈঠকে থাকবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছিল। বিনপুরের বিধায়ক সার্কিট হাউসে পৌঁছতেই তাতে জল পড়ে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলস্তর কমছে। পর্যাপ্ত জলের অভাবে চাষের কাজ মার খাচ্ছে। ক্ষতি বাড়ছে কৃষকের। জেলায় মোট কৃষিজমির পরিমাণ ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৭৫ হেক্টর। এর মধ্যে সেচ-সেবিত ৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৬৩ হেক্টর জমি। জঙ্গলমহলে মোট কৃষিজমি রয়েছে ২ লক্ষ ১২ হাজার ৯৭৮ হেক্টর। এর মধ্যে সেচের সুবিধা রয়েছে ১ লক্ষ ৯ হাজার ২৯ হেক্টরে। সমস্যা সমাধানে চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে রাজ্য জুড়ে ১২ হাজার পুকুর খননে উদ্যোগী হয়েছে জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর। এই সংক্রান্ত খসড়া পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। শনিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জঙ্গলমহলে পুকুরের তুলনায় ‘চেক ড্যাম’ তৈরিতে জোর দেওয়া হবে। কারণ, এখানে ছোট ছোট খাল রয়েছে। সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য বিধায়কদের সহযোগিতা চেয়ে মন্ত্রী বলেন, “কোথাও সমস্যা হলে জানাবেন। তা সমাধানে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করব।” সেই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, “প্রস্তাবিত প্রকল্প রূপায়ণে অর্থের অভাব হবে না।” |