আদিবাসী গ্রামে প্রাথমিক স্কুল গড়ল শময়িতা মঠ। গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের হাঁসপাহাড়ি গ্রামে রবিবার এই স্কুলটির উদ্বোধন হল। শময়িতা মঠের সম্পাদিকা ঋষিঋদ্ধা অনাহতা বলেন, “এই আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে প্রাথমিক স্কুল ছিল না। গ্রামের ছেলে-মেয়েদের তাই কয়েক কিলোমিটার দূরে প্রাথমিক স্কুলে পড়তে যেতে হত। ওদের গ্রামে তাই আমরা এই স্কুলটি গড়ে দিলাম।” তিনি জানান, ইতিমধ্যে ওই স্কুলে ৩৫ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হবে। মঠ থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের বই-খাতা দেওয়া হবে।
স্কুলের নাম রাখা হয়েছে ‘বিদু চাদান ইতুন আখড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়’। বাড়ির কাছে স্কুল পেয়ে খুশি হাঁসপাহাড়ির বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা সীতারাম হেমব্রম, সুশান্ত হেমব্রমরা বলেন, “দূরে স্কুল থাকায় অনেকেরই পড়াশোনায় আগ্রহ থাকত না। তাই পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত ছিল অনেকে। এ বার আশাকরি গ্রামে শিক্ষার হার বাড়বে।” তাঁরা জানান, বন দফতরের জমির উপরে এই স্কুল গড়ে উঠেছে। তাঁরা স্কুল গড়ার জন্য বনদফতরের কাছে জমি চেয়েছিলেন। বন দফতর তাঁদের আর্জি মেনে নেয়। শময়িতা মঠ সেই জমির উপরে স্কুল বাড়ি তৈরি করে দিয়েছে। এই গ্রামে তফশিলি উপজাতির প্রায় ৩০টি ও তফশিলি জাতির প্রায় ১০টি পরিবার বাস করেন।
হাঁসপাহাড়িতে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছয় নি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রও নেই। গ্রামে ঢোকার রাস্তাও নেই বলে অভিযোগ। এত ‘না’র মধ্যে এখন এই স্কুল বাড়ি পেয়ে স্বভাবতই বাসিন্দারা উচ্ছ্বসিত। এ প্রসঙ্গে শময়িতা মঠের সম্পাদিকা বলেন, “অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া গ্রাম। এখান থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তাই ছিক করেছি, মাসে দু’বার করে এখানে মঠের ভ্রাম্যমান চিকিৎসক দল পাঠানো হবে।” স্কুলটির উদ্বোধন করেন স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। মঠের সম্পাদিকা বলেন, “ওই স্কুলটি যাতে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অনুমোদনের পায় সে জন্য বিধায়ককে অনুরোধ জানিয়েছি। ভবিষ্যতে এখানে ছাত্রাবাস তৈরি করারও ইচ্ছা রয়েছে।”
বিধায়ক বলেন, “শমিয়তা মঠের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তাঁদের হাত ধরে এ গ্রামে শিক্ষার পথ আরও প্রশস্ত হল।” তাঁর আশ্বাস, “স্কুলটি যাতে প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের অনুমোদন পায় সেই চেষ্টা করব। এই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগেরও ব্যবস্থা করা হবে।” |