মামণি, উজ্জ্বলারা এ বার অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারবে। কারণ, এখন ওদের ঘরে সৌর লণ্ঠন এসে গিয়েছে। কেরোসিনের খরচ কমানোর জন্য তাদের আর সাত তাড়াতাড়ি হ্যারিকেন নিভিয়ে শুয়ে পড়তে হবে না।
খুশি ওদের মা, ঠাকুমাও। কাঠ-পাতা জ্বেলে ধোঁয়ার মধ্যে রান্না করার বদলে এ বার থেকে ‘সোলার কুকারে’ই তাঁরা রান্নার কাজ সারতে পারছেন।
শনিবারের পরে তাই অনেকটাই বদলে গিয়েছে বড়গোড়া। বলরামপুর থানার অযোধ্যা পাহাড় ঘেঁষা এই গ্রামে শনিবার বিকেলে কলকাতার একটি সংস্থার সদস্যেরা গিয়ে ওই সামগ্রী বিলি করেন। ‘ফ্রিড’ (দ্য ফোর্স ফর রুরাল এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভালাপমেন্ট) নামের ওই সংস্থার সম্পাদক সোমনাথ পাইন বলেন, “এলাকার কয়েকটি গ্রামে এখনও বিদ্যুতের সংযোগ পৌঁছয়নি। তার মধ্যে বড়গোড়া গ্রামের ১৫টি পরিবারকে সৌরলণ্ঠন দেওয়া হল। বাসিন্দাদের পাশাপাশি পড়ুয়াদেরও এতে সুবিধা হল।” তিনি জানান, বাসিন্দাদের সমষ্টিগতভাবে ব্যবহারের জন্য কয়েকটি ‘সোলার কুকার’ও দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হাতে ধরে বাসিন্দাদের ব্যবহার করার পদ্ধতিও শিখিয়ে দেন। |
সংস্থার সদস্য চিকিৎসক সৌরভ সরকার ও অনিমেষ ঘোষ বাসিন্দাদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওষুধও দেন। সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, বাসিন্দাদের স্বনির্ভর করার জন্য তাঁরা কিছু কর্মমুখী প্রকল্প নিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আমেরিকার জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির পড়ুয়া আইরিন। তাঁর কথায়, “এখানকার মানুষদের জন্য কিছু করতে পেরে আমরা গর্বিত। প্রায় দু’বছর ধরে আমি ফ্রিডের সঙ্গে যুক্ত।”
ঘাটবেড়ার প্রাক্তন শিক্ষক অজিত সিং, তেলেভাজা বিক্রেতা শিবপ্রসাদ সিং বলেন, “ওরা আমাদের জন্য যা করছেন, তাতে আমরা খুব খুশি।” আর সৌরলণ্ঠন পেয়ে ঘাটবেড়া-কেরোয়া হাইস্কুলের ষষ্ঠশ্রেণির ছাত্রী মামণি সিং ও উজ্জ্বলা সিং’রা বলেছে, “এ বার আর সন্ধ্যা নামলে শুয়ে পড়তে হবে না। অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করব।” |