|
|
|
|
বই থেকে মুখ তুলে উৎসবে শহরের কৃতীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর |
ঘরের পাশের জগদ্ধাত্রী পুজোর উৎসবটাই কোনওদিন আগে এমন ভাবে দেখা হয়নি। আকাশদীপ, বিস্ময়দের তাই এখন অবাক হওয়ারই পালা।
বছর তিনেক আগে কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল থেকে মাধ্যমিকের কৃতী ছাত্র বিস্ময় মণ্ডল সারা রাজ্যের নিরিখেই দুর্দান্ত ফল করেছিলেন। এখন ডাক্তারির ছাত্র। স্কুলে নীচু ক্লাসে পড়ার দিনগুলোতে তেমন ভাবে উৎসবের মর্ম বুঝতে পারত না। একটু বড় হলে বইকেই সঙ্গী করে নিয়েছিলেন। একটার পর একটা পরীক্ষার কঠিন হার্ডল পেরিয়ে যেতে পেরেছেন সাফল্যের সঙ্গে। তারপরে ফুরসৎ মিলেছে। তাঁর সঙ্গেই এসেছিলেন রাজস্থান আর রাঁচির বন্ধুরা। পুজোর আনন্দ কুড়িয়ে নিয়েছেন যতটুকু পারেন। বন্ধুদের সঙ্গে একটার পরে একটা মণ্ডপ ঘুরে বেড়িয়েছেন। পুজোর আগের দিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল পুজো। পুজোর পরের দিন পর্যন্ত চলেছে সেই আনন্দ। বিস্ময় বলেন, “সত্যি বলতে কী, আমার নিজের শহরেই জগদ্ধাত্রী পুজো যে এতটা জমকালো তাই আমি জানতাম না। বন্ধুরা তো বটেই, আমিও অবাক হয়ে গিয়েছি।”
একই অবস্থা গত বছর কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট থেকেই মাধ্যমিকে তাক লাগানো ফল করা আকাশদীপ দে’র। অঙ্ক তাঁর প্রিয় বিষয়। চলতি বছরে আন্তর্জাতিক একটি অঙ্ক প্রতিযোগিতাতেও তিনি দুর্দান্ত মেধার পরিচয় রেখেছেন। তাই আকাশদীপ পুজোর দিনেও অঙ্ক নিয়ে বসে পড়েছেন। কিন্তু মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরেছেন। উৎসবের মেজাজ দেখেছেন, আইসক্রিমও খেয়েছেন।
পড়াশোনা আর ঠাকুর দেখা, দু’টোই সমান তালে চালিয়ে গিয়েছেন শ্রেয়সী চক্রবর্তীও। কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট গার্লস থেকে গত বছর কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করেছেন তিনি। তিনি সোজা ভাগ করে নিয়েছিলেন, সকালে পড়াশোনা আর বিকেলে মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে ঠাকুর দেখা। মাঝ রাতে গিয়েছিলেন বুড়ি মা দর্শনে। বিসর্জনের দিন গভীর রাত পর্যন্ত নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে শোভাযাত্রা দেখাও বাদ যায়নি।
কিন্তু ভিড় ভাল লাগে না বলে বিসর্জনের দিন বাড়ি থেকেই বেরোননি কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের আর এক কৃতী ছাত্র হিল্লোল বিশ্বাস। বরং উৎসবের দিনগুলোতে শব্দের দাপটে কিছুটা বিরক্তই তিনি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ঠাকুর দেখেননি। ফিরে এসে আবার বসে গিয়েছেন পড়তে। যেমন, কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট গার্লসের এ বছরের মাধ্যমিকের কৃতী ছাত্রী সুতপা কর্মকার অবশ্য পড়াশোনা করেই কাটিয়ে দিয়েছেন পুজোর দিনগুলি। ঠাকুর দেখতে যাওয়া দূরের কথা, দরজা জানলা বন্ধ করে পড়াশোনা করেছেন তিনি। এই বছর মাধ্যমিকে ওই স্কুলেরই কৃতী ছাত্র শুভ কুণ্ডু কিন্তু প্রাণ খুলে আনন্দ করেছেন পুজোর দিনে। তবে পুজোর আগের দিন রাতে বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার কথা হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। |
|
|
|
|
|