বড় বড় পুজোর ভিড়ে গত বছরও যে পুজো এক রকম অন্তরালেই ছিল, এ বার সেই শক্তি সংঘের পুজো ঘিরে ভিড় উপছে পড়েছে। সৌজন্য, জেলার মন্ত্রী তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল বিশ্বাস। রাজ্যের যুবকল্যাণ মন্ত্রীর বাড়ির ঠিক পাশেই শক্তি সংঘের মণ্ডপ। শহরের মানুষ এই পুজোর আকর্ষণীয় মণ্ডপ দেখতে বৃহস্পতিবার থেকেই ভিড় করেছেন। শুক্রবার গভীর রাতেও জনস্রোত উপছে পড়েছে এই মণ্ডপে।
এই শহরে দীর্ঘদিন ধরেই পুরসভা শাসন করে আসছে কংগ্রেস। শহরের বেশ কয়েকটি পুজোয় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন কংগ্রেস নেতারাও। শহরে এখন সমানতালে কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতারা জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা। তাই সেখানে কোন নেতার পুজো কত ভাল হল, তার একটা ‘ফ্রেন্ডলি ম্যাচ’-ও বেশ উপভোগ করেছেন কৃষ্ণনগরের মানুষ। ‘মন্ত্রীর পুজো’র সঙ্গে তাই জোর লড়াই হয়েছে ‘পুরপ্রধানের পুজো’র। শক্তিনগর পাঁচ মাথা মোড়ের এই পুজো শহরের বড় আকর্ষণ। পুরপ্রধান অসীম সাহা এই পুজোর সঙ্গে জড়িত। মন্দিরের আদলে তৈরি এই মণ্ডপটিও কম আকর্ষণীয় নয়। |
পিছিয়ে ছিলেন না পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর দিলীপ শর্মাও। শহরের এক প্রান্তে কালীনগরের রেনবো ক্লাব শহরের জনপ্রিয় পুজোগুলির অন্যতম। শহরের মানুষ একবার অন্তত এই পুজো ঘুরে যাবেনই। উপছে পড়া ভিড় সামলাতে এ বারেও হিমসিম খেয়েছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। এ বারের থিম বৌদ্ধ উপাসনালয়। একই অবস্থা হাতারপাড়া বারোয়ারির পুজোতেও। কংগ্রেস কাউন্সিলর দিলীপ বিশ্বাস এই পুজোর সঙ্গে জড়িত। এ বার পুজোর প্রধান আকর্ষণ ছিল প্রতিমা আর আলোকসজ্জা।
তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে ঘট বিসর্জনের শোভাযাত্রা। হাতারপাড়া বরাবরই খুব আকর্ষণীয় শোভাযাত্রা করে। এ বারও তাঁরা সকলকে মুগ্ধ করেছেন। ঘট বিসর্জনের দর্শকদের মুগ্ধ করেছে গোলাপট্টি বারোয়ারিও। তৃণমূল নেতা গৌরীশঙ্কর দত্তের নাম জড়িয়ে রয়েছে এই পুজোর সঙ্গে। প্রতি বছরই নতুন কোনও সৃজনশীল কাজ এই বারোয়ারির প্রধান আকর্ষণ। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মানুষের ভিড়ও। কংগ্রেসের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমর চক্রবর্তীর নাম জড়িয়ে রয়েছে কাঁঠালপোঁতা বারোয়ারির সঙ্গে। প্রতিমা, আলোকসজ্জার পাশাপাশি ঘট বিসর্জনে বড় আকর্ষণ ছিল এই পুজোও।
এ ছাড়াও কংগ্রেস, তৃণমূলের নানা কাউন্সিলর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন শহরের বিভিন্ন পুজোয়। কেউ সোনার অলঙ্কারে প্রতিমাকে সাজিয়েছেন, কেউ আলোকসজ্জায় অভিনবত্ব এনেছেন, কেউ মণ্ডপে দিয়েছেন নতুনত্বের ছোঁয়া। শহরের শ্রেষ্ঠ উৎসব ঘিরে তাই জোর জমে উঠেছিল ‘ফ্রেন্ডলি ম্যাচ’। রেফারি ছিলেন লক্ষ লক্ষ সাধারণ দর্শনার্থী। উৎসবের স্বার্থে তাঁরা চান, এই ‘প্রতিযোগিতা’ চলতে থাকুক। চ্যাম্পিয়ানের ট্রফিটা তাঁরা তুলে দিয়েছেন জগদ্ধাত্রীর হাতেই। |