একদিকে বুনো হাতির হামলা, অন্যদিকে চিতাবাঘের হানায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন ডুয়ার্সের কালচিনি ব্লকের উত্তর মেন্দাবাড়ি এলাকার বাসিন্দারা। চিলাপাতা রেঞ্জের মেন্দাবাড়ি জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় প্রায়ই চিতাবাঘ গরু, ছাগল, শুয়োর ও মুরগি তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। বন দফতরে জানিয়ে কোনও ফল না হওয়ায় এবার লাঠি, বল্লম নিয়ে গবাদি পশু পাহারায় নেমেছেন এলাকার বাসিন্দারা। বন্য প্রাণ-৩ বিভাগের এডিএফও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উত্তর মেন্দাবাড়ি এলাকায় চিতাবাঘের হামলা চলছে বলে খবর পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিস্ট রেঞ্জের বন কর্মীদের টহলদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে খাঁচা পাতা হবে।” |
মেন্দাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অভিজিৎ নার্জিনারির অভিযোগ, মাস দুয়েক ধরে উত্তর মেন্দাবাড়ির মিশন পাড়া, দশ হালিয়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় গত দু’মাসে কমপক্ষে ২০-২৫টি গরু, ১০টি শুয়োর, ১০-১২টি ছাগল ও মুরগি নিখোঁজ হয়েছে। প্রথম দিকে গ্রামের মানুষ ভাবতেন, গবাদি পশু বুড়ি বাসরা নদী টপকে মেন্দাবাড়ি জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে। দু’একদিনের ফিরে আসবে। সপ্তাহ দুয়েক আগে কিশোর মুন্ডা নামে এক যুবক জেঠার গরু আনতে বুড়ি বাসরা নদীর পাড়ে গিয়ে দেখেন একটি চিতাবাঘ গরুর গলা কামড়ে বসে রয়েছে। কিশোর বলেন, “চোখের সামনে ওই দৃশ্য দেখে ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। চিতাবাঘটি গরুটিকে মেরে টানতে টানতে মেন্দাবাড়ি জঙ্গলে নিয়ে যায়।” উত্তর মেন্দাবাড়ির এক পঞ্চায়েত সদস্য মনা রাভার অভিযোগ, “আমার একটি গরু মাসখানেক আগে চিতা বাঘ নিয়ে যায়। পাশের গ্রামের কোলে কার্জির তিনটি গরু দু’মাস ধরে বেপাত্তা।” একই অবস্থা নীরেন কার্জির। তার তিনটি শুয়োর, একটি ছাগল ও একটি মোরগ চিতাবাঘ তুলে নিয়ে যায়। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অভিজিৎ নার্জিনারি বলেন, “গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ ও পশুপালন করেন। শুয়োর ও ছাগল প্রতিপালন করে অনেকে সংসার চালান। আমরা বিষয়টি জানিয়ে বন্য প্রাণ-৩ বিভাগের আধিকারিকদের জানিয়েছি। কোনও ব্যবস্থা হয়নি। নিজেদের ক্ষতি রুখতে গ্রামবাসীরা লাঠি, বল্লম নিয়ে পাহারায় নেমেছেন।’’ |