নামডাকের দিক থেকে হুগলি জেলার চন্দননগরই জগদ্ধাত্রী পুজোয় প্রচারের আলোর শীর্ষে। তবে এই জেলার আরও কিছু প্রান্তে জগদ্ধাত্রী পুজো হয় ঘটা করেই। তারই মধ্যে অন্যতম রিষড়া।
রিষড়া রেল স্টেশনের পূর্ব এবং পশ্চিম দিক জুড়ে পুজোর সংখ্যা প্রায় ৭৫। একে অপরকে টেক্কা দিতে রকমারি থিমের আমদানি ঘটেছে মণ্ডপগুলিতে। শহর জুড়ে আলোর বন্যা। স্টেশনের পশ্চিম পাড়ে সাধন কাননের অঙ্কুর পুতুল দিয়ে তৈরি করেছে মণ্ডপ। পুজোর থিম ‘ছোট মানুষ বড় মানুষ’। লম্বা-বেঁটে এবং নিম্নবিত্ত-উচ্চবিত্ত মানুষের জীবনধারণ বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে এখানে। ব্রহ্মানন্দ মাঠ বন্ধুগোষ্ঠীর মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে যোধপুর প্যালেসের একটি অংশের অনুকরণে। ২ নম্বর স্পোর্টিং ক্লাবের মণ্ডপ জুড়ে শিশুদের কাজললতার সারি। বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ৪০ রকমের ১২ হাজার কাজললতা দিয়ে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। লক্ষ্মীপল্লি অধিবাসীবৃন্দের পুজোতেও বেশ জাঁকজমক রয়েছে। |
রেল লাইনের পশ্চিম দিকে পার্ক তরুণ দল ভিনরাজ্যের একটি শিবমন্দিরের আদলে মণ্ডপ বানিয়েছে। মন্দিরের গায়ে বিভিন্ন দেবদেবী। পার্ক সম্মিলনীর মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে ফলের পেটি কেটে হরেক রকম কারুকাজ করে। দেবীর পাশে জয়া এবং বিজয়া। নবচেতনা ক্লাব রবীন্দ্রনাথকে মধ্যমণি করেছে তাদের পুজো ভাবনায়। কবির বিভিন্ন ছবির সম্ভার থাকছে মণ্ডপে। দেখানো হচ্ছে তাঁর উপরে তথ্যচিত্রও। বৈচিত্র্যের নিরিখে উপরের সারিতেই থাকবে রিষড়া রবীন্দ্র সঙ্ঘ (তেঁতুলতলা)। পুজোর থিম ‘মনের পবিত্রতাই কামনার পরিপূর্ণতা’। মণ্ডপসজ্জার উপাদান শাঁখা, সিঁদুর, পুঁতি, চুরি, জরি। এ ছাড়াও ১৪ হাজার প্রদীপ। ভিড় টানছে লেনিন মাঠ যুবগোষ্ঠীও। চারবাতি ইয়ংস্টাফের তালপাতার মণ্ডপ, রিষড়া সম্মিলনীর পুজোও নজর কেড়েছে।
সুষ্ঠু ভাবে পুজো কাটানোর জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে হুগলি জেলা পুলিশের তরফে। এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গোটা এলাকায় ৯টি পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র থাকছে। শ’দেড়েক স্বেচ্ছাসেবীও রাস্তায় নামানো হবে। চন্দননগরের ধাঁচে রিষড়াতেও ‘জগদ্ধাত্রী সম্মান’-এর আয়োজন করা হয়েছে পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে। বাংলার প্রথম বারোয়ারি গুপ্তিপাড়া বিন্ধ্যবাসিনী জগদ্ধাত্রী পুজোও শুক্রবার থেকে আরম্ভ হয়েছে। চিরাচরিত রীতি মেনেই এখানে পুজো হচ্ছে এ বারেও। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, পুজোটি এ বারে ২৫১ তম বছরে পড়ল। |