বিরোধী-কণ্ঠ থামাতে ‘অহিংস’ আন্দোলনকারীরাই নামল হিংসার পথে!
নানা ডামাডোলে অণ্ণা-শিবির যে ক্রমে দিশাহীন হয়ে পড়ছে, আজ তারই প্রকাশ ঘটল নাগপুরে। অণ্ণা-সহযোগী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের এক সভায়। কেজরিওয়ালের বক্তৃতার সময় তাঁদের আরএসএস-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে স্লোগান দেওয়ায় এক দল বিক্ষোভকারীকে পিটিয়েই সভা থেকে বার করে দিলেন ‘অহিংস’ অণ্ণা হজারের সমর্থকরা। পরে অবশ্য ‘ঘণ্টানাদ’ নামে ওই স্থানীয় সংগঠনের বিক্ষোভকারীদের মারধরের নিন্দা করে কেজরিওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, “হিংসার আশ্রয় নেওয়া ঠিক হয়নি।” |
দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন তাঁদের। অথচ পরের পর তাঁদের বিরুদ্ধেই উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ। বিতর্ক থেকে বাঁচতে কখনও নিজে মৌনী নিচ্ছেন অণ্ণা। কখনও মৌনী করছেন তাঁর ব্লগকে। প্রকাশ্যে আসছে শিবিরের অন্তর্কলহ। অণ্ণার সঙ্গে কেজরিওয়াল, প্রশান্ত ভূষণ, কিরণ বেদীদের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, সে কথা কালই প্রকাশ্যে এনেছেন শিবিরেরই সদস্য রাজু পারুলেকর। তাঁর দাবি, অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ত মনোভাবের জন্য কেজরিওয়াল, প্রশান্ত ভূষণ ও কিরণ বেদীকে কোর কমিটি থেকে বাদ দিতে চেয়েছিলেন অণ্ণা। এই বিরোধ সামনে চলে আসার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই ঘটল মারধর।
গোটা শিবিরের যখন এই ছন্নছাড়া অবস্থা, তারই মধ্যে সহযোগীদের সঙ্গে অণ্ণার ‘দূরত্ব’ বাড়তে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে কংগ্রেসও। যে কারণে দিগ্বিজয় সিংহ এ দিনও অণ্ণাকে ‘সাদাসিধে মানুষ’ আখ্যা দিয়ে আঙুল তুলেছেন তাঁর সহযোগীদের দিকেই। তাঁর বক্তব্য, “অণ্ণার সঙ্গীরা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য তাঁকে ব্যবহার করছেন।” হিসার-পরবর্তী পর্বে আর কোনও দলের বিরুদ্ধে প্রচার করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েও সম্প্রতি অণ্ণা ঘোষণা করেছেন, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে জনলোকপাল বিল পাশ না হলে কয়েক রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোটে ফের তাঁরা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচারে নামবেন। দিগ্বিজয়ের দাবি, সঙ্গীদের চাপেই এই মত বদল। অণ্ণা সম্পর্কে তাঁর নানা মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হলেও দিগ্বিজয় অবশ্য মনে করেন, ‘মৌচাকে ঢিল মেরেছেন’ বলেই তাঁকে নিয়ে এত কথা হচ্ছে। দিগ্বিজয়ের দাবি অনেক কংগ্রেস নেতাই তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে এক মত। তবে এ বিষয়ে সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধীর সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি। |