পুলিশের তৎপরতায় মহানগরীতে নির্বিঘ্নেই সাঙ্গ হয়েছিল দুর্গোৎসব। তাল কেটে গেল রবিবার, জগদ্ধাত্রী প্রতিমার বিসর্জনের রাতে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাসতালুক ভবানীপুরেই বিসর্জনের শোভাযাত্রায় শব্দবাজি রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ। যথেচ্ছ ইটপাটকেল ছোড়া হল পুলিশকর্মী এবং ভবানীপুর থানার উপরে। পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ বেধে গেল। ভাঙচুর হল কয়েকটি গাড়ি ও বাস। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি চালাল পুলিশ। পুলিশ কমিশনার তো বটেই, ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রীও।
পুলিশ জানায়, গোলমাল শুরু হয় বিসর্জনে শব্দবাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করেই। রাত পৌনে ১০টা নাগাদ প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা ভবানীপুর থানার সামনে পৌঁছনোর আগে চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের সামনে একের পর এক শব্দবাজি ফাটাতে থাকে। |
জনরোষে চুরমার বাসের কাচ। রবিবার রাতে ভবানীপুরে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক |
থানার কর্তব্যরত কর্মীরা সেখানে গিয়ে ওই পুজো কমিটির সদস্যদের শব্দবাজি ফাটাতে নিষেধ করায় বচসা বেধে যায়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎই শোভাযাত্রা থেকে পুলিশকর্মী ও থানা লক্ষ করে ইট ছোড়া হয়। পুলিশ লাঠি চালিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের লাঠিতে কয়েক জন জখম হন। তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হটে গিয়ে রাস্তার গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে ক্ষিপ্ত জনতা। পথচলতি চার-পাঁচটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। সেই সময় সেখানে এসে পড়া ট্রাম কোম্পানির একটি বাসেও ভাঙচুর চলে।
গণ্ডগোলের আধ ঘণ্টার মধ্যেই বাড়ি থেকে হেঁটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান ভবানীপুর কেন্দ্রের বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তত ক্ষণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসে গিয়েছে। তিনি পুলিশ ও উত্তেজিত জনতার উদ্দেশে বলেন, “কাল ঈদুজ্জোহা। কোনও রকম উত্তেজনা ছড়াবেন না।” ইতিমধ্যে ভবানীপুর থানায় আসেন পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দা, ডিসি (সাউথ) দেবপ্রকাশ সিংহ। মুখ্যমন্ত্রী থানার ভিতরে গিয়ে পুলিশকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন। তার পরে হেঁটেই বাড়ি ফিরে যান। পরে ঘটনাস্থলে আসেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ডিসি (সাউথ) বলেন, “কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের কাছ থেকে পুরো বিষয়টি জানা গিয়েছে। ঘটনা তদন্ত হবে।” জগদ্ধাত্রী প্রতিমাটি থানার পিছনে একটি গলিতে রাখা হয়েছে। |