উত্তর কলকাতা
এক ঝাঁক নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সিপিএম
লকাতা জেলা সিপিএমে শুদ্ধকরণ অভিযান শুরু হয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পুরনো পাড়া শ্যামপুকুর-বাগবাজার এলাকা থেকে। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ওই এলাকায় দলের একঝাঁক নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এঁরা কেউ লোকাল কমিটির সম্পাদক, কেউ লোকাল কমিটির সদস্য, কেউ জোনাল সদস্য আবার কেউ জেলার নেতা। বিষয়টি ইতিমধ্যে কলকাতা জেলা নেতৃত্ব অনুমোদনও করেছেন।
আর্থিক দুর্নীতি থেকে আরম্ভ করে প্রোমোটারদের সঙ্গে যুক্ত থাকা, অসাধু ভাবে অর্থ-উপার্জন, এমনকী, মহিলা-ঘটিত অভিযোগও আছে ওই সব সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে। এক নেতার বিরুদ্ধে পার্টি পত্রিকার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও উঠেছে। একজনের বিরুদ্ধে নিয়মিত ব্যবসায়ীদের টাকায় মদ্যপানের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে জেলা কমিটির প্রবীণ নেতা জোনাল সম্পাদক অসিত নন্দীকে জিজ্ঞসা করা হলে তিনি বলেন, “কিছু নেতার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি দলের অভ্যন্তরীণ। যা হবে, দলের গঠনতন্ত্র মেনেই হবে।” সাধারণত একই এলাকায় এতজন নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না সিপিএমকে। কিন্তু উত্তর কলকাতার এই নেতাদের সম্পর্কে এলাকার সাধারণ মানুষ তো বটেই, দলের বড় অংশের কর্মীরাও অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন।
কলকাতা জেলার এক নেতার কথায়, “ওই নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কেবল সম্মেলন-প্রক্রিয়া উত্তপ্ত হয়ে উঠবে তাই নয়, নেতাদের বাঁচানোর জন্য অভিযোগের আঙুল উঠবে খোদ আলিমুদ্দিনের দিকেই। কারণ, একাধিক সময়ে বুদ্ধবাবুর কাছে নানা সূত্রে ওই নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ওই নেতাদের অনেককেই ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন বুদ্ধবাবু। সুতরাং কোনও ভাবেই তিনি দায় এড়াতে পারবেন না।” যাদবপুরের সিপিএমের নেতা, একদা বুদ্ধবাবুর ঘনিষ্ঠ স্বপন রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সব কমিটি থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার সময়ে বুদ্ধবাবুর আর এক ঘনিষ্ঠ নেতা যাদবপুরের খোকন ঘোষ দস্তিদারের বিরুদ্ধেও তদন্ত করার জন্য আলিমুদ্দিন অনুমোদন দিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বকে। সে কারণেই শ্যামপুকুর-বাগবাজার এলাকার নেতাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন কলকাতা জেলা নেতৃত্ব। রাজ্য কমিটির এক নেতার কথায়, “আমরা যতই ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলি, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা না নিই, তা হলে মানুষ আমাদের বিশ্বাস করবে না।”
শ্যামপুকুর লোকাল কমিটির সম্পাদক কুনাল বসু, প্রাক্তন সম্পাদক প্রদীপ্ত সেনগুপ্ত, লোকাল কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ দত্ত, রঞ্জন সেনগুপ্ত, সাধন পয়রা, অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, হাতিবাগান এলাকার পল্লব পাল, মলয় দাস, বাগবাজারের দীপন কর প্রমুখের নামে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। দল এঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। একাধিক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। বিভিন্ন বিষয়ে দলের নিচুতলা থেকে অভিযোগ জমা পড়েছে ডিওয়াইএফআইয়ের প্রাক্তন নেতা কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অসিতাঙ্গ গঙ্গোপাধ্যায়, বাগবাজার লোকাল কমিটির সম্পাদক শ্যামল নন্দী, কলকাতা পুরসভার এক নম্বর বরো কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সলিল চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও। দলীয় সূত্রে খবর, এঁদের কাজকর্মে দলের একাংশ অসন্তুষ্ট। তা জানিয়ে এই নেতাদের ‘সতর্ক’ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা জেলার নেতাদের একাংশ অবশ্য প্রশ্ন তুলেছে, শ্যামলবাবু, সলিলবাবুর মতো বর্ষীয়ান নেতাদের যদি ‘সতর্ক’ করা হয়, তাহলে রাজদেও গোয়ালার মতো নেতা বাদ যান কী করে?
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.