কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
সমাবর্তনে আমন্ত্রণ জানিয়ে ‘বার্তা’ হাসিনাকে
বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে আমন্ত্রিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজ্য সরকারের অনুমতি নিয়েই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা জল চুক্তি সম্পাদন আটকে যাওয়ার পরে মমতারই সরকারের অনুমোদনে এই শহরে হাসিনাকে আমন্ত্রণ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ঘটনা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি কোনও ‘অভিনব’ ঘটনা নয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণের রীতিও আছে। গত বছরই যেমন সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন ভুটান-রাজ। কিন্তু সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যায়, এ বারের সমাবর্তনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ নেহাতই ‘কাকতালীয়’ ঘটনা নয়। ওই সিদ্ধান্তের পিছনে রাজ্য সরকারের, বলা ভাল স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর ‘রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক স্বার্থ’ জড়িয়ে রয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের অভিমত।
রাজ্যের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে, এই যুক্তি দেখিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের তিস্তা জলচুক্তিতে সায় দেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে ঢাকা-সফর থেকেও শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, চুক্তির খসড়া তাঁকে দেখানো হয়নি। তিস্তার যা অবস্থা, তাতে রাজ্যের, বিশেষত, উত্তরবঙ্গের স্বার্থ বিঘ্নিত করে বাংলাদেশের সঙ্গে জলবণ্টনে সম্মত হওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় বলে তখন জানিয়েছিলেন মমতা। ওই পদক্ষেপের ফলে ‘রাজ্যের স্বার্থরক্ষাকারী’ হিসাবে মমতার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ‘উন্নত’ হলেও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল কূটনৈতিক মহলে। হাসিনার সঙ্গে মমতার ব্যক্তিগত সম্পর্ক অবশ্য বরাবরই ‘মসৃণ’। তবুও তিস্তা-কাণ্ডের জেরে সেই সম্পর্কে যাতে কোনও ভাবেই আঁচড় না-পড়ে, তার জন্য ইতিমধ্যেই ব্যক্তিগত স্তরে উদ্যোগী হয়েছিলেন মমতা। তাঁর সরকারের সম্মতি নিয়েই সেই তৎপরতাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এ বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে সমাবর্তন হওয়ার কথা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় রবিবার বলেন, “গত বছর ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক এসেছিলেন সমাবর্তনে। মানচিত্র ধরে উপরের দিক থেকে নামলে ভুটানের পরেই পড়শি দেশ বাংলাদেশ। তাই এ বার বাংলাদেশের প্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের আরও বক্তব্য, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের ‘পুবে তাকাও’ নীতিই তারা অনুসরণ করছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সমাবর্তন-বক্তৃতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুরোধ জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, সপ্তাহখানেক আগে হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাঁর সম্মতি পেলেই সমাবর্তনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে।
তিস্তা জল চুক্তির সময় থেকেই মমতা বলে আসছেন, বিষয়টির সঙ্গে এ রাজ্যের স্বার্থ জড়িত ছিল। কিন্তু হাসিনার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে কোনও ‘ভুল বোঝাবুঝি’র অবকাশ নেই। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ‘সৌহার্দ্য ও সৌজন্যের বার্তা’ দিতেই পুজোর সময় হাসিনাকে বাঙ্গালোর সিল্কের শাড়ি ‘উপহার’ পাঠিয়েছিলেন মমতা। সীমান্তপারের রাজ্য থেকে হাসিনার প্রতি ‘বন্ধুত্বের হাত’ যে বাড়ানোই আছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতার হয়ে ঢাকায় সেই ‘বার্তা’ই পৌঁছে দিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণ-বার্তা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.