কংগ্রেসের প্রধান-সহ ৮ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পঞ্চায়েতে ক্ষমতার পালাবদল হতে চলেছে। ঘটনাটি সাঁইথিয়ার মাঠপলশা পঞ্চায়েতের। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস একক ভাবে ৭টি ও কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল পায় ১টি আসন। বাকি ছ’টি আসনের মধ্যে সিপিএম ২, সিপিএম সমর্থিত নির্দল ১, ফরওয়ার্ড ব্লক ২ ও সিপিআই ১টি আসন পায়। তবে তৃণমূল এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি।
বোর্ড গঠনের সময়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের ১ জন সদস্য কংগ্রেসে যোগ দেন। এর ফলে কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা বেড়ে ৯ হয়। প্রধান হন কংগ্রেসের মাসুদা খাতুন। প্রসঙ্গত, মাস তিনেক আগে সদলবলে পঞ্চায়েতের সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন মাসুদা খাতুন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাঁরা ইস্তফাপত্র ফিরিয়ে নেন। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, এই তিন মাসে এমন কী হল এক জন বাদে প্রধান-সহ ৮ জন তৃণমূলে যোগ দিলেন? সাঁইথিয়ার বিডিও উৎপল চক্রবর্তী বলেন, “ক’মাস আগে মাঠপলশা এলাকার উন্নয়ন থমকে পড়েছিল ঠিকই, তবে এখন কাজকর্ম স্বাভাবিক হচ্ছে।”
মাসুদা খাতুন বলেন, “কর্মীদের অসহযোগিতা-সহ নানা কারণে ইস্তফাপত্র দিয়েছিলাম। পরে দলের সিদ্ধান্তে আমরা ইস্তফাপত্র ফিরিয়ে নিই। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ ও উন্নয়নের মানসিকতা আমাদের আকৃষ্ট করেছে। শেষ পর্যন্ত সকলে বসে সিদ্ধান্ত নিই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার।” সাঁইথিয়া ব্লক তৃণমূল নেতা সাধন মুখোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সাঁইথিয়া শহর সভাপতি মানস সিংহের নেতৃত্বে এ দিন বোলপুরে তৃণমূলে জেলা কার্যালয়ে দলের জেলাসভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের উপস্থিতিতে তাঁরা তৃণমূলে যোগ দেন। মাসুদা খাতুনের দাবি, “শুধু পঞ্চায়েত সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দিইনি, এলাকার পুরো সংগঠন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তবে কংগ্রেসের এক পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিতে অস্বীকার করায় ফব ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া ওই সদস্যকে নিয়ে মোট ৮ জন দল পরিবর্তন করেছি।”
তৃণমূলের জেলাসভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে আমাদের একটিও আসন ছিল না।” তাঁর দাবি, “মাঠপলশা পঞ্চায়েতের ৮ জন সদস্য, পুরো সংগঠন এবং বোলপুরের দুই কংগ্রেস কাউন্সিলর আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন।” কংগ্রেসের সাঁইথিয়া ব্লক সভাপতি প্রদীপ সরকার বলেন, “কী ভাবে কী হল কিছুই বুঝতে পারছি না। মাঠপলশা এলাকা আজীবন কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। এখানে কার্যত তৃণমূলের কোনও অস্তিত্বই ছিল না। অথচ দলীয় প্রধান-সহ সকলে তৃণমূলে কী ভাবে যোগ দিলেন সেটাই ভাবছি। পুরো বিষয়টি দলীয়স্তরে খতিয়ে দেখা হবে।” |