বিয়ে হয়েছিল মাত্র ন’মাস আগে। স্বামী-স্ত্রী, দু’জনেই পুলিশকর্মী। রবিবার ভোরে পথ দুর্ঘটনায় ওই দম্পতি-সহ একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যুতে তাই শোকের ছায়া পূর্বস্থলীর দশঘরিয়া গ্রামে।
এ দিন ভোরে হেমায়েতপুরে বাস ধরার জন্য স্ত্রী আরলি রাসদাস (২৪) ও ছোট ভাই পিন্টু রায়কে (২৪) সঙ্গে নিয়ে স্কুটারে চড়ে পারুলিয়া থেকে যাচ্ছিলেন দশঘরিয়ার বাসিন্দা কমল রায় (২৬)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোর সওয়া ৫টা নাগাদ এসটিকেকে রোডে মধ্য শ্রীরামপুরে স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসের সামনে উল্টো দিক থেকে আসা একটি গাড়ি তাঁদের স্কুটারে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই ভাইয়ের। মারাত্মক জখম হন আরলিদেবী। তাঁকে প্রথমে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপতালে পাঠানো হয়। পরে শক্তিনগরে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
দশঘরিয়ার বাসিন্দা কমলবাবুর সঙ্গে ন’মাস আগেই বিয়ে হয় মাদ্রা গ্রামের আরলিদেবীর। তিন ভাইবোনের মধ্যে আরলিদেবীই বড়। বাবা গৌরসুন্দর দাস কর্মহীন। গোটা পরিবার কর্মরত বড় মেয়ের উপরেই নির্ভরশীল ছিল। তাঁর মামা বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, “এমন ভাবে, আমরা কখনও ভাবতে পারিনি। গোটা পরিবারের এখন কী হবে, জানি না।” দুর্ঘটনার খবর আসার পর থেকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন কমলবাবুর মা বাসনাদেবী এবং আরলিদেবীর মা বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী। দুই ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক কমলবাবুর বাবা গৌরচাঁদ রায়। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, পুলিশ সে ব্যাপারে কিছু না জানালেও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, স্কুটারটি ভারসাম্য হারানোর জন্যই এমন ঘটেছে। গাড়িটিকে অবশ্য ধরা যায়নি। খবর পাওয়ার পরে ঘটনাস্থলে যান পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। পূর্বস্থলী থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে।” এ দিকে, কমলবাবুর দাদা সুদাম রায়ের ক্ষোভ, দুই ভাইয়ের দেহ নবদ্বীপ হাসপাতালে ময়না-তদন্ত হয়ে গেলেও কাগজপত্র তৈরিতে গাফিলতির জেরে শক্তিনগর হাসপাতালে এ দিন আরলিদেবীর ময়না-তদন্ত হয়নি। সে কারণে সৎকারের কাজ এ দিন করতে পারেননি তাঁরা। |