|
|
|
|
ন্যাশনাল মেডিক্যাল |
সচিবের সফরেও হাজিরায় ঢিলেমি কাটেনি কর্মীদের |
কাজী গোলাম গউস সিদ্দিকী • কলকাতা |
নির্দিষ্ট সময়ের আগেই চলে এসেছেন ডাক্তার।
তারও আগে থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে রোগীরা।
কিন্তু চিকিৎসা পাচ্ছেন না কেউই।
কেন?
যিনি চিকিৎসকের কাছে ‘আউটডোর কার্ড’ পাঠাবেন, সেই কর্মীই যে গরহাজির। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার এসে জানালেন, ওই কর্মীর পৌঁছতে ১০টা বেজে যাবে।
স্থান: ন্যাশনাল মেডিক্যাল
কলেজ হাসপাতাল। নিউরো সার্জারি বিভাগ।
কাল: বৃহস্পতিবার সকাল।
২৪ ঘণ্টা আগে রোগী সেজে ওই হাসপাতালের হালহকিকতই সরেজমিনে দেখে গিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র। যাচাই করেছেন, নিয়ম মেনে সকাল সওয়া ৯টার মধ্যে বহির্বিভাগ খুলছে কি না। তাঁর আচমকা সফরে সতর্ক হয়ে চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ বৃহস্পতিবার সময় মেনে চলে এলেও বাগ মানানো যায়নি চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের। অথচ বহির্বিভাগ চালু করার ক্ষেত্রে তাঁদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্যসচিব আসার পরেও পরিস্থিতি বদলাল না কেন?
ন্যাশনালের সুপার পার্থ প্রধান বলেন, “চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর
খুব অভাব। যে-ক’জন আসেন, তাঁরাও সময় মানেন না। যে-হেতু প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী কম, তাই বাধ্য হয়েই কিছু অনিয়ম মেনে নিতে হচ্ছে।”
হাপিত্যেশ করে থাকা রোগীরা অবশ্য হাজিরার ক্ষেত্রে হাসপাতালের এক শ্রেণির কর্মীর এই অনিয়মের কথা বিলক্ষণ জানেন। কারণ, এটা তো তাঁদের নিত্য অভিজ্ঞতা! কখনও ডাক্তার সময়মতো আসেন না। কখনও আউটডোর কার্ডই তৈরি হয় না। কখনও আবার সেই কার্ড ডাক্তারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কর্মী থাকে না। তাই চিকিৎসা করাতে এসে ভোগান্তি তাঁদের কাছে নতুন নয়।
যেমন স্নায়ুরোগী প্রাণ দত্ত। তিন বছর ধরে চিকিৎসা করাচ্ছেন ন্যাশনালে। বৃহস্পতিবারেও এসেছিলেন। এবং জানালেন, এমন বহু ঘটনার সাক্ষী তিনি।
কিন্তু সব সরকারি হাসপাতালেই তো সকাল সওয়া ৯টায় বহির্বিভাগ চালু করতে হবে বলে কড়া নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
তার উপরে খোদ স্বাস্থ্যসচিবের সরেজমিন সফর। তা সত্ত্বেও হাজিরায় অনিয়ম কেন?
হাসপাতাল সূত্রের খবর, নিউরো সার্জারি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মী ছটপুজোর জন্য ছুটি নিয়েছেন।
পুজো শেষ। কিন্তু তার পরেও তাঁকে কাজে যোগ দিতে দেখা যায়নি।
তাই কয়েক দিন ধরেই রোগীদের ভোগান্তি চলছে।
ন্যাশনালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর পদ ৭০০টি। এখন আছেন ২৫০ জন। অর্থাৎ ৪৫০টি পদে লোক নেই। এই বিপুল পরিমাণ শূন্য পদ নিয়ে পরিষেবা দিতে গিয়ে তাঁরা নাজেহাল হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্যসচিব বুধবার সকাল ৯টা থেকে ওই হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের বহির্বিভাগে বসে থেকে দেখেছেন, কী ভাবে চলে ওই বিভাগ। দেখেছেন, সিনিয়র চিকিৎসকেরা কখন সেখানে পৌঁছন। বুধবার সকালে শুধু জুনিয়র ডাক্তারেরাই বহির্বিভাগে ছিলেন। সেটা দেখে অসন্তোষ গোপন করেননি স্বাস্থ্যসচিব।
ঠিক তার ২৪ ঘণ্টা পরে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত কার্ডিওলজি বিভাগে দেখা মিলেছে মাত্র এক জন সিনিয়র চিকিৎসকের। যদিও আসার কথা ছিল দু’জনের। মেডিসিন বিভাগে প্রথম ডাক্তার পৌঁছেছেন সকাল সাড়ে ৯টায়।
তার মিনিট ১৫ পরে এসেছেন একাধিক জুনিয়র ডাক্তার। সার্জারি ব্লকে চিকিৎসকেরা চলে এলেও কার্ড পাঠানোর কর্মী না আসায় কাজ শুরু হতে সওয়া ১০টা বেজে যায়।
|
সব চেয়ে উদ্যমী মন্ত্রীই আছেন স্বাস্থ্যে: রাজ্যপাল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদে রয়েছেন সব চেয়ে উদ্যমী মন্ত্রীই। তিনিই আবার স্বাস্থ্য দফতরও সামলাচ্ছেন। তাই এ রাজ্যে পূর্ণ সময়ের আলাদা স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেন প্রয়োজন, তা বুঝতে পারছেন না রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। রাজ্যে পূর্ণ সময়ের পৃথক স্বাস্থ্যমন্ত্রী চেয়ে সরব হয়েছে সিপিএম, বিজেপি-সহ বিরোধী শিবির। এই পরিপ্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পরে এই নিয়ে রাজ্যপালকে প্রশ্ন করা হয়। রাজ্যপাল বলেন, “মমতা যেমন উদ্যমী, তাতে ওই পদে (স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদে) ওঁর চেয়ে ভাল আর কে-ই বা হতে পারেন?” নতুন সরকারের দাবি, ক্ষমতায় আসার অল্প দিনের মধ্যেই তারা রাজ্যে শিশুমৃত্যুর হার কিছুটা হলেও কমাতে পেরেছে। তা সত্ত্বেও শিশুমৃত্যু ঘটছে। এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে নারায়ণন বলেন, “শিশুদের মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক ঠিকই। কিন্তু রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল খুব খারাপ, সে-কথাও বলা যাবে না। কারণ, স্বাস্থ্য পরিষেবার নিরিখে দেশের মধ্যে তিন বা চার নম্বরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তবে আরও উন্নতি অবশ্যই প্রয়োজন।” |
|
|
|
|
|