দোকান প্লাস্টিক প্যাকেট দেওয়া বন্ধ করেনি। নির্বিকার প্রশাসনও। তারই মধ্যে ইস্পাত কলোনি প্লাস্টিকমুক্ত করার পরিকল্পনা নিলেন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা (ডিএসপি) কর্তৃপক্ষ। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে সেই কাজের ভার পেয়েছেন দুঃস্থ মহিলারা। ডিএসপি-র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বিভুরঞ্জন কানুনগো জানান, ডিএসপি-র কমিউনিটি সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটির আওতায় এই কাজ করা হচ্ছে।
প্লাস্টিক প্যাকেট নগরায়নের সামনে এক জটিল সমস্যা। এগুলি মাটিতে মেশে না। বৃষ্টি বা বর্জ্য জল দিয়ে ভেসে গিয়ে তা নর্দমার মুখে আটকে দেয়। বন্ধ হয়ে যায় নিকাশি। ফলে বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। ডিএসপি-র পরিকল্পিত টাউনশিপেও সেই এক সমস্যা। ২০০৭-এ ডিএসপি টাউনশিপকে প্লাস্টিক মুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়। ডিএসপি-র কমিউনিটি সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটির আওতায় অর্থ বরাদ্দ করা হয়। দায়িত্ব দেওয়া হয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। এলাকার দুঃস্থ মহিলাদের এই কাজে নিয়োগ করে সংস্থাটি। প্রয়োজনীয় পোশাক, জুতো, দস্তানা-সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীও দেওয়া হয় ওই মহিলাদের। |
ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ-জোন ও বি-জোনে দু’টি আলাদা দল কাজ করছে। এ-জোনের দলে সদস্য সংখ্যা ১৬ জন। এবং বি জোনের দলে ১৯ জন। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত তুষার সমাদ্দার জানান, কাজে যুক্ত প্রত্যকেই মহিলা। প্রয়োজনে বাড়ির পুরুষেরাও তাঁদের সাহায্য করেন। সকাল থেকে তাঁরা কাজ শুরু করেন। দুপুর পর্যন্ত কাজ করে ফিরে যান বাড়িতে। এরপর বাড়িতে গৃহকর্ম করেন। কাজের ভিত্তিতে আয় করেন তাঁরা। এ ভাবে কেউ কেউ মাসে হাজার দেড়েক টাকাও আয় করতে পারেন। তাঁরা শুধু প্লাস্টিক প্যাকেটই সংগ্রহ করেন না। জঞ্জালও সাফাই করে দেন তাঁরা। সংগ্রহ করা প্লাস্টিক জড়ো করে তা গাড়ি করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বর্জ্য জমা করার নির্দিষ্ট জায়গায়।
এ-জোনের দয়ানন্দ রোডের বাসিন্দা পিয়ালি বিশ্বাস বলেন, “আগে যেখানে-সেখানে প্লাস্টিক প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা যেত। ডিএসপি প্লাস্টিক প্যাকেট সাফাই কাজ শুরু করার পর এখন অনেকটাই কমেছে।” একই কথা বললেন বি জোনের আইনস্টাইন রোডের বাসিন্দা বিনয় মণ্ডলও। তাঁর কথায়, “টাউনশিপ পরিষ্কার রাখতে ওই মহিলাদের অবদান প্রশংসনীয়।” ট্রাঙ্ক রোর্ডের ধারে প্লাস্টিক সংগ্রহের কাজ করছিলেন ঝাণ্ডাবাগের বাসিন্দা রাধারানী বাগদি, পদ্মা বাউরিরা। তাঁরা জানালেন, মাসে ২০ থেকে ২২ দিন বি-জোনের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করেন তাঁরা। |