|
|
|
|
প্রসঙ্গ, সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান |
অবস্থা একদম ভাল নয়, স্বীকারোক্তি সভাধিপতির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুরুলিয়া |
জেলার গরিব মানুষকে পাকা শৌচাগার ব্যবহার করানোর ক্ষেত্রে এ বার ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সাহায্য নেবে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। বুধবার পুরুলিয়া শহরে ‘স্বচ্ছতা উৎসব’-এর সূচনা করতে গিয়ে এ কথা জানিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিলাসীবালা সহিস।
সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচি বিশেষ করে শৌচাগার নির্মাণ ও ব্যবহারের প্রশ্নে এ রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরেই পিছনের সারিতে রয়েছে এই জেলা। স্বয়ং বিলাসীবালাদেবীর স্বীকারোক্তি, “এই প্রশ্নে আমাদের অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। নিজেদের কথা বলতে গেলে মুখ লুকোতে হয়। আমাদের যে জায়গায় পৌঁছনো উচিত ছিল, সেখানে পৌঁছতে পারিনি।” পুরুলিয়ার জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহের কথায়, “বছর দুয়েক আগে জেলার কমবেশি ২০ ১০ শতাংশ মানুষ শৌচাগার ব্যবহার করতেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা ১০০ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে।” |
|
ছবি: সুজিত মাহাতো। |
প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষকে কেন শৌচাগারমুখী করা যায়নি? জেলাশাসকের যুক্তি, “আসল সমস্যা মানসিকতায়। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শৌচাগারের থেকে বেশি সংখ্যায় মোবাইল ফোন রয়েছে। অর্থাৎ, শৌচাগার তৈরি বা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সময় সময় দারিদ্রই প্রতিবন্ধকতা নয়। গরিব মানুষকে বাড়ি বাড়ি শৌচাগার তৈরি করতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আর তাঁদের বোঝাতে হবে, কেন শৌচাগার ব্যবহার করা জরুরি। ওঁরা যদি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আমি শৌচাগার ব্যবহার না করলে আপনার কী?’, তা হলে বলতে হবে, ব্যবহার না করলে রোগ ছড়াবে।” আর সভাধিপতি বলছেন, “অবস্থা এমন বলে তো হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না! আমাদের ২০ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের মাধ্যমে আমরা জেলার সমস্ত গ্রামে সমীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের বলেছি, প্রকৃত তথ্য লিখতে। কোনও রকম অসত্য তথ্য না দিতে। এই সমীক্ষা থেকে যে ছবি উঠে আসবে, তার ভিত্তিতেই আমরা কাজ করব।”
বুধবার থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত জেলা জুড়ে ‘স্বচ্ছতা উৎসব’ চলবে। সভাধিপতি জানিয়েছেন, তাঁরা এই সময়ে গ্রামে গ্রামে শৌচাগার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালাবেন। এর জন্য ঝুমুর, মাইকের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকেও প্রচারের হাতিয়ার করা হবে। বৈজ্ঞানিক উপায়ে কী ভাবে কম খরচে শৌচাগার তৈরি করা যায়, কেন বাঁশ বা দরমার বদলে পাকা শৌচাগার অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মতএ সব গরিব মানুষকে বোঝাতে চায় প্রশাসন। জেলা পরিষদের সচিব বিধান রায় বলেন, “জাতীয় গ্রমীণ কর্ম সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্প ও সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচির যৌথ তহবিলে আমরা শৌচাগার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” এ জন্য উপভোক্তাকে অল্প টাকা দিতে হবে। কত টাকা, তার পরিমাণ এখনও ঠিক হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
জেলা সভাধিপতির কথায়, “বিষয়টা এমন যে প্রকাশ্যে মহিলাদের বা অন্যদের মিটিং করে বলতে অস্বস্তি হয়। কিন্তু সকলকেই সমস্যাটা বুঝতে হবে। সেটাই আমরা বোঝাবো। এত দিন হয়নি বলে হবে না, এই ধারণা নিয়ে বসে থাকার কোনও মানে হয় না।”
জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ কতটা সফল হয়, এখন সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|