|
|
|
|
বিপাকে পরিবহণ নিগম |
নিয়োগ যাচাই করে তবেই বেতন, তথ্য তলব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কর্মীদের বেতন বাবদ কত টাকা লাগবে, ভর্তুকিতে চলা রাজ্যের পরিবহণ সংস্থাগুলো অর্থ দফতরকে সেটা আগাম জানিয়ে দিত। মাস শেষ হওয়ার আগেই সেই অনুসারে টাকা পৌঁছে যেত সংস্থার কোষাগারে। এ ভাবেই চলছিল এত দিন। কিন্তু নতুন সরকার সেই ‘প্রথা’য় বাদ সেধেছে।
মহাকরণ থেকে চিঠি পাঠিয়ে পরিবহণ নিগমগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের কর্মী-সংখ্যা কত, তাঁরা কোথায় কোন কাজে নিযুক্ত, কবে ওই কর্মীদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে এ-সবই বিস্তারিত ভাবে জানাতে হবে। সেই সব তথ্য হাতে এলে তা যাচাই করার পরেই বেতনের টাকা ছাড়বে অর্থ দফতর। এই মর্মে অর্থ দফতর ইতিমধ্যে একটি ‘নোট’-ও পাঠিয়ে দিয়েছে পরিবহণ দফতরের কাছে। তারই ভিত্তিতে পরিবহণ সংস্থাগুলোর কাছে কর্মীদের চাকরি সংক্রান্ত খুঁটিনাটি জানতে চাওয়া হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী সুব্রত বক্সী।
পরিবহণ সংস্থাগুলোকে রাজ্য সরকার আগেই জানিয়েছিল, কোষাগারের যা হাল, তাতে আর ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়। এ বার তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতেই হবে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা এ দিন বলেন, “তার পরেও পরিবহণ নিগমগুলো আগের মতোই ভর্তুকি চেয়ে অর্থ দফতরের দ্বারস্থ হচ্ছে।’’ বর্তমান সরকারের বক্তব্য, প্রয়োজন না-থাকা সত্ত্বেও বামফ্রন্টের আমলে বহু লোককে কেবল চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্যই বিভিন্ন নিগমে নিয়োগ করা হয়েছিল। এর ফলে বহু নিগমেই অযথা বেড়ে গিয়েছে কর্মীর সংখ্যা। তাঁদের বেতনের বাড়তি বোঝা চেপেছে সরকারের ঘাড়ে। প্রাথমিক তদন্তে পরিবহণ দফতর দেখেছে, অধিকাংশ নিগমে বাস-পিছু কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। এর পাশাপাশি বহু ভুয়ো কর্মীরও হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ। এই সব অভিযোগ ঠিক কি না, সেই ‘সত্য’ জানতেই এ বার কর্মীদের চাকরি সংক্রান্ত তথ্য বিস্তারিত ভাবে জানতে চাওয়া হয়েছে বলে ওই পরিবহণকর্তা জানান।
গত জুন থেকেই রাজ্যের পাঁচটি পরিবহণ নিগমের কর্মীরা দেরিতে বেতন পাচ্ছেন। পুজোর আগে এককালীন ভাতাও পাননি তাঁরা। এই ব্যাপারে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “কর্মীদের অগ্রিম হিসেবে সরকার টাকা দেবে। অথচ কর্মীদের বেতন থেকে যখন সেই টাকা কাটা হবে, পরিবহণ সংস্থা তা নিজের ঘরে রেখে দেবে। হিসেব চাইলেও পাওয়া যাবে না। এটা তো চলতে পারে না। সরকার যখন কর্মীদের টাকা দেবে, তখন ফেরতটাও বুঝে নেবে।”
পরিবহণমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও পরিবহণ সংস্থার পরিচালনমণ্ডলী যদি সরকারের অনুমতি ছাড়া কর্মী নিয়োগ করে, তা হলে সেই কর্মীদের বেতনের দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে। এতে ফাঁপরে পড়ে গিয়েছেন বিভিন্ন নিগমের কর্তারা। তাঁদের এক জন বলেন, “অতীতে পরিবহণ নিগমগুলোয় পরিচালনমণ্ডলীর সিদ্ধান্ত মেনে বহু নিয়োগ হয়েছে। তার পরে সেই নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে সরকারকে। অর্থ দফতরও তা মেনে নিয়েছে। এখন নিগমগুলোর যা আর্থিক অবস্থা, তাতে সরকার কর্মীদের বেতনের টাকা মঞ্জুর না-করলে সঙ্কট দেখা দেবে।”
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, পুজোর বেশ কয়েক দিন আগে নিগমগুলোকে চিঠি দিয়ে কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর এবং ছবি-সহ নিয়োগের সবিস্তার তথ্য পাঠাতে বলা হয়ছিল। কিন্তু সেই তথ্য মহাকরণে পৌঁছয়নি। তাই অর্থ দফতর বেতনের টাকা মঞ্জুর করতে চাইছে না। |
|
|
|
|
|