সুন্দরবনের দুই অংশে সেতু তৈরি নিয়ে জটিলতা
পুনর্বাসনের দাবিতে সরব আদিবাসীরা
সেতুর একদিকের কাজ আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কাজ শেষ করতে গিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। সেতুর আর এক দিক যেখানে শেষ হবে সেখানে ঘরবাড়ি ও চাষের জমি থাকায় কী ভাবে কাজ শেষ করা হবে তা নিয়ে সমস্যায় পড়ে গিয়েছে ঠিকাদার সংস্থা। যদিও জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই সব এলাকায় বসবাসকারীদের সঙ্গে তাঁদের উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় পূর্ব দ্বারিকাপুর ও রায়দিঘি বোলের বাজারের মধ্যে নাগচর নদীর উপরে সেতু তৈরির জন্য ২০০৯ সালে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ ৪৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছিল। এর এক বছর পরে ২০১০ সালে ৭২৩ মিটার লম্বা ও ১১ মিটার চওড়া ওই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজ শুরু হয়েছিল রায়দিঘি বোলের বাজারের দিক থেকে। নদীর আর এক দিকে রয়েছে পূর্ব দ্বারিকাপুর আদিবাসী পাড়া। সেতুর কাজ শেষ করতে হলে ওই পাড়ারই ১০-১২টি পরিবারের ঘরবাড়ি ও চাষের জমির উপর দিয়ে তা করতে হবে।
বোলের বাজারের দিকে চলছে সেতুর কাজ।--নিজস্ব চিত্র।
পরিবারগুলির অধিকাংশই মৎস্যজীবী। সেতু করতে গিয়ে ঘরবাড়ি ভেঙে দিলে তাঁদের আশ্রয়ের কী হবে? চাষের জমির ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে কি না এ সব নিয়ে চিন্তিত বাসিন্দারা জানিয়ে দিয়েছেন উপযুক্ত পুনর্বাসন না পেলে তাঁরা ওই অংশে সেতুর কাজ করতে দেবেন না। এ ব্যাপারে মাস খানেক আগে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকেও তাঁরা এই দাবির কথাই জানান বলে গ্রামবাসীদের বক্তব্য।
পূর্ব দ্বারিকাপুর গ্রামের বাসন্দা রবীন সর্দার বললেন, “সেতুটি এমনভাবে তৈরি হচ্ছে তার ফলে আমাদের ঘরবাড়িস চাষের জমি চলে যাবে। তাহলে আমরা খাব কি? থাকবই বা কোথায়?” গ্রামবাসী মানিকস রবি, মুনি সর্দারদের দাবি, “আমাদের পুনর্বাসন না দেওয়া পর্যন্ত একানে সেতুর কোনওরকম কাজ করতে দেওয়া হবে না। আমাদের দাবি আমরা প্রশাসনকেও জানিয়ে দিয়েছি।”
এ ব্যাপারে পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শেখ রাজ্জাক বলেন, “ওই পরিবারগুলি খুবই দরিদ্র। অন্যদিকে সেতুর কাজও সেষ করা জরুরি। এই অবস্থায় ওই সব পরিবারকে ইন্দিরা আবাস যোজনায় জ়ঘর তৈরি করে দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, পূর্বদ্বারিকাপুর ও বোলের বাজারের মধ্যে সেতুর কাজ সেষ হয়ে গেলে পাথরপ্রতিমা ও রায়দিঘির মানুষের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হবে। সম্প্রতি ওই এলাকার সাংসদ ও কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী চৌধুরীমোহন জাটুয়া সেতুর পরিদর্শনে যান। তিনি বলেন, “সেতু চালু হলে পাতরপ্রতিমার মানুষ আগের চেয়ে অনেক কম সময়ে রায়দিঘি হয়ে কলকাতায় যাতায়াত করতে পারবেন।”
তিনি আরও জানান, সেতুর কাজ শেষ করতে গিয়ে যে সব পরিবারগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাঁদের উপযুক্ত পুনর্বাসের বিষয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেতু তৈরির দায়িত্ব যাদের হাতে সেই সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল বলেন, “সেতুর কাজ শেষ করতে হলে ওই সব পরিবারগুলিকে অন্যত্র সরতে হবে। সেক্ষেত্রে তাঁদের উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।” একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, সেতুর কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এ সব সমস্যার কারণেই তা হয়নি। সেই কারণে সেতু তৈরির খরচও বেড়ে গিয়েছে। আগের যা বরাদ্দ ছিল তার পরে আরও প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যেই সেতুর কাজ শেষ করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.