বছর সাতেকের এক বালককে গাড়ি তুলে অপহরণ করে পালানোর সময় জনতার হাতে ধরা পড়ে গেল চার দুষ্কৃতী। অপহরণকারীদের এক জনকে ধাক্কা দিয়ে চলন্ত গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে মাটিতে পড়ে পালায় ওই বালক। তার চিৎকারেই এলাকার লোকজন ছুটে এসে অপহরণকারীদের গণধোলাই দেয়। চার দুষ্কৃতীই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে মারের চোটে। ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্পের উপনগরীর খুব কাছে বুধবার সন্ধ্যায় এই ঘটনার পরে তাদের গাড়িটিও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মৃণাল মজুমদার বলেন, “ধৃত চার দুষ্কৃতী এবং যাঁর ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তারা সকলেই গরু ব্যবসায়ী। সেই কারণেই বকেয়া টাকা পয়সা নিয়ে কোনও গণ্ডগোলের জেরে ওই বালককে অপহরণের চেষ্টা হয় বলে মনে করা হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের সকলেরই বাড়ি মালদহের সুজাপুর।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুষ্কৃতীদের নাম রাজু শেখ, ইসমাইল শেখ, রফিক শেখ ও বাক্কার শেখ। চার জনকেই বেনিয়াগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে।
যে বালককে অপহরণ করার চেষ্টা হয়, তার নাম সোহেল শেখ। তার বাবার নাম আব্দুল লতিফ। মাস তিনেক হল তাঁরা ফরাক্কা ব্যারেজের ৯ নম্বর ব্লকের একটি আবাসনে ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেছেন। সোহেলের মা সাবেরা বিবি বলেন, “এই দিনবাড়িতে আমি ও ছোট ছেলে সোহেল ছিল। সন্ধ্যা নাগাদ জনা চারেক অচেনা লোক এসে আমার স্বামীর খোঁজ নিচ্ছিলেন। আমি বলেছিলাম, স্বামী না আসা পর্যন্ত বাড়িতে অপেক্ষা করতে। কিন্তু তারা আচমকা সোহেলকে বলে সিগারেট কিনে আনতে। সোহেল বেরোলে তারাও বেরোয়। তারপরে আচমকা সোহেলকে গাড়িতে তুলে ফেলে। গাড়ি চলতে শুরু করতেই সোহেল অবশ্য এক জনকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়।” তারপরেই সোহেল চিৎকার করতে শুরু করে। চিৎকার শুরু করেন সাবেরা বিবিও। তাতেই আশপাশের জনতা ছুটে এসে গাড়িটি ঘিরে ধরে। ভিড়ের মধ্যে গাড়িটিও আর এগোতে পারেনি। দুষ্কৃতীদের তখন গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে শুরু হয় গণপ্রহার।
ঘটনাস্থল এসিসি ক্লাব চত্বর থেকে ২০০ মিটার দূরের থানা থেকে পুলিশ এসে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ওই চার জনকে উদ্ধার করে। |