দিনে দুপুরে ফাঁকা মাঠে এক যুবককে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হল কান্দি থানার মুনিয়াডিহি গ্রাম সংলগ্ন বারকোনার মাঠে। নিহতের নাম অসিত ঘোষ (২২)। তাঁর বাড়ি ভরতপুর থানার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামে। বুধবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ এই ঘটনার পরে ওই যুবককে বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক বিবাদের জেরেই খুন করা হয়েছে ওই যুবককে। অসিতবাবুর মা রেখা ঘোষের দাবি, “আমার ছেলে বলে গিয়েছে কে তাকে খুন করেছে।” পুলিশ জানিয়েছে, মূল অভিযুক্ত বালি ঘোষ এলাকা ছেড়ে পলাতক। কান্দির মহকুমা পুলিশ অফিসার অনামিত্র দাস বলেন, “অসিতবাবুর খুড়তুতো বোন মাধবী ঘোষ অভিযোগ করেছেন বালি ঘোষের বিরুদ্ধে। বালি ঘোষ অসিতবাবুর খুড়তুতো দাদার শালা। তবে তিনি পলাতক। তাঁর সন্ধানে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। আমাদেরল ধারণা, পারিবারিক বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।”
মুনিয়াডিহি ও পাঁচথুপী এই দুই গ্রামের মাঝখানে ফাঁকা মাঠে অসিতবাবুকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোমরে ও কপালে এলোপাথাড়ি কোপ দেওয়া হয়। ওই মাঠের ধারেই রয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে পাঁচথুপী যাওয়ার রাস্তা। সেখানে লোকজনের যাতায়াত রয়েছে। সেখানেই আচমকা এই ঘটনা কিন্তু কারও প্রথমে চোখে পড়েনি। ঘটনার পরে অসিতবাবুর আর্তনাদে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে দেখতে পান, তিনি রক্তাপ্লুত অবস্থায় ছটফট করছেন। তখন এলাকার লোকজনই তাঁর বাড়িতে খবর দেন। তাঁকে বড়ঞা হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, অসিতবাবুর খুড়তুতো দাদা নিতাই ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে বালি ঘোষের বোনের। তাঁদের তিন জনেরই বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরে। নিতাইবাবুর নিজের বোন তাঁর স্বামীকে নিয়ে ওই দাদার বাড়িতেই থাকেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, সেই নিয়েই নিতাইবাবু ও বালিবাবুর পরিবারে সমস্যা শুরু হয়। পুলিশের সন্দেহ, তাতেই কোনওভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন অসিতবাবু। সেই কারণেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান। অসিতবাবুর বাবা পল্লব ঘোষ বলেন, “আমার ছেলেকে যারা খুন করেছে, তাদের কড়া শাস্তি চাই আমি। না হলে আমি শান্তি পাব না।” পল্লববাবু বলেন, “পারিবারিক বিবাদের জের যে এতদূর গড়াবে তা আমরা কেউই ভাববে পারিনি।” অসিতবাবু পেশায় কৃষিজীবী। তিনি বিয়ে করেননি। রেখাদেবী বলেন, “ঘটনাটা পুরোই পরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু পারিবারিক বিবাদ এমন কিছু হয়নি, যার জন্য আমার ছেলেকে খুন করে ফেলতে হবে।” |