নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বহরমপুর-সাঁইথিয়া রুটের একটি বেসরকারি বাস উল্টে রাস্তার পাশে নয়ানজুলিতে পড়ে মারা গিয়েছেন দুই যাত্রী।
ওই ঘটনায় জখম হন প্রায় ৪০ জন যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ৬ জনকে বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান পাতিডাঙার বাসিন্দা রেজাউল হক (১৮)। মৃত্যু হয় আরও এক যুবকের। তবে এ দিন রাত পর্যন্ত তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ জানায়, বুধবার দুপুরে কান্দির উদয়চাঁদপুর কালভার্টের কাছে ইট বোঝাই একটি লরিকে পাশ কাটাতে গিয়েই নয়ানজুলিতে উল্টে যায় বাসটি। ঘটনার পরেই চালক ও খালাসি পালিয়ে যায়।
সাঁইথিয়াগামী ওই বাসের ভেতর যাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা ছিল। সেই সঙ্গে বাসের ছাদেও যাত্রীরা চড়েছিল বলে জানা গিয়েছে। বাসের ছাদে ছিলেন মহালন্দির বাসিন্দা মুস্তাফা শেখ। তাঁর কথায়, “বাসের ভেতরে ভিড় থাকায় ছাদে বসে যাচ্ছিলাম। আমরা প্রায় ৪০ জন বাসের ছাদে ছিলাম। বহরমপুর গির্জার মোড় থেকে আমি বাসে উঠি। তখন থেকেই চালক অত্যন্ত জোরে বাস চালাচ্ছিলেন।” এর পরে বাসটি উদয়চাঁদপুর কালভার্টের কাছে ইট বোঝাই একটি লরিকে পাশ কাটাতে গিয়েই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালক বাসটিকে রাস্তার ডান দিকে নামিয়ে দেওয়ায় নয়ানজুলিতে উল্টে যায় বাসটি। এতে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন বাসের যাত্রীরা। দুর্ঘটনার পরেই উদয়চাঁদপুরের বাসিন্দারা এসে জখম যাত্রীদের উদ্ধার করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজে হাত লাগায়। |
গুরুতর জখম সাত জনকে বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বেসরকারি কোম্পানির কর্মী বহরমপুরে ইন্দ্রপ্রস্থের বাসিন্দা রতন হাজরা অফিসের কাজে কান্দি যাচ্ছিলেন। রতনবাবু বলেন, “বাসের ভেতরে যাত্রী ঠাসা ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও চালক অত্যন্ত বেপরোয়া ভাবে দ্রুত গতিতে বাস চালাচ্ছিলেন। আচমকা বাসটি রাস্তার ডান দিকে নেমে গিয়ে নয়ানজুলিতে উল্টে যায়। ভেঙে যায় বাসের জানালার কাঁচ। সেখান দিয়েই অত্যন্ত তৎপরতায় গ্রামবাসীরা আমাদের উদ্ধার করেন এবং বহরমপুরগামী গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের বহরমপুরের হাসপাতালে পাঠানোর বন্দোবস্ত করেন।”
জখম এক যুবকের আত্মীয় মোহর শেখের অভিযোগ, “এমনিতেই বহরমপুর-কান্দি রাজ্য সড়কের বেহাল দশা। বহরমপুর থেকে কান্দি যাওয়ার ২৬ কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন জায়গার পিচের চাদর উঠে খানা-খন্দ তৈরি হয়েছে। এবড়ো-খেবড়ো ওই রাস্তার উপর দিয়ে বাসগুলি যে ভাবে দ্রুত গতিতে যাতায়াত করে, তাতে যে কোনও সময়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বাসের চালক থেকে খালাসি সকলেই বিষয়টি জানে। তা সত্ত্বেও বেপরোয়াভাবে বাস চালানোর প্রবণতা কমছে না।” |