নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দলের অন্দরে ফ্রন্টের ঘোষণা ছিল, প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জমায়েত করতে হবে। মিছিলের লোকসংখ্যা তার ধারেপাশে গিয়েছে কি না, সে নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। তবে মিছিল যে সাড়া জাগিয়েছে, তা নিয়ে বিতর্কের জায়গা নেই। জেলা তৃণমূলের এক নেতা আবার সে প্রসঙ্গ টেনেই যুক্তি সাজিয়েছেন, “জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওদের কর্মী-সমর্থকেরা এসেছেন। জমায়েত ভাল হতেই পারে। কর্মীদের এই অংশগ্রহণই প্রমাণ করে, কোথাও সন্ত্রাসের আবহ নেই।”
অথচ রাজ্যের নতুন শাসকদলের ‘সন্ত্রাসে’র বিরুদ্ধেই ছিল এ দিনের কর্মসূচি। বামেদের অভিযোগ, জেলা জুড়ে তৃণমূলের লোকজন সন্ত্রাস চালাচ্ছে। কর্মী-সমর্থকেরা সন্ত্রস্ত। অবস্থা এমনই যে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য জেলার অধিকাংশ এলাকায় বুথ এজেন্টই খুঁজে পায়নি বামেরা। ক’দিন আগে এ নিয়ে জেলাশাসকের কাছে লিখিত অনুযোগ জানিয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার। এই অবস্থায় দলকে চাঙ্গা করতে দলের অন্দরেই পথে নামার দাবি উঠছিল। তপন ঘোষ-সুকুর আলি’র মতো নেতারা গা ঢাকা দিয়েছেন। অনুজ পাণ্ডে, এন্তাজ আলি’র মতো নেতারা গ্রেফতারি এড়াতে পালিয়ে বেরাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ‘মহামিছিল’ সংগঠিত করাই সিপিএমের কাছে ‘চ্যালেঞ্জ’ ছিল।
এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ মেদিনীপুর শহরের কলেজ মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়। মিরবাজার, ছোটবাজার, স্কুলবাজার, বটতলা-চক সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্ত পরিক্রমা করে মিছিল। নেতৃত্বে ছিলেন দীপক সরকার। ছিলেন সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা-সহ শরিক দলের নেতারাও। মিছিল যখন মাঝপথে, তখনও মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হয়েছেন।
ক’দিন আগে জেলায় এসে দলেরই এক সভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায় মন্তব্য করেছিলেন, “জল পচে গেলে যেমন মাছ বাঁচতে পারে না, তেমনই মানুষ সঙ্গে না থাকলে সরকার বাঁচবে না। মানুষকে সঙ্গে রাখতে গেলে মজবুত সংগঠন জরুরি।” বুধবারের মিছিলের পর সেই প্রসঙ্গ টেনে জেলা সিপিএমের এক নেতা বলেন, “জল যে একেবারে পচেনি, এ দিনের মিছিলে জনস্রোতই তার প্রমাণ।” |