দেওয়ালিতে খানিকটা উতরোলেও ছট পুজোয় খনি ও শিল্পাঞ্চলে মুখ থুবড়ে পড়ল পুলিশের শব্দবাজি রোখার আশ্বাস।
মঙ্গলবার ছট পুজোর রাতে দেদার শব্দবাজি পুড়ল আসানসোলে। সেই মাত্রায় না হলেও বিক্ষিপ্ত ভাবে শব্দবাজির দাপট দেখা গিয়েছে দুর্গাপুরের বেশ কিছু এলাকায়। কালীপুজোর সপ্তাহখানেক আগেই শিল্পাঞ্চল জুড়ে শব্দবাজি রুখতে পুলিশ ও পরিবেশ দফতরের তরফে যৌথ অভিযান হয়। প্রচুর শব্দবাজি বাজেয়াপ্তও করা হয়। কালীপুজোয় আসানসোল, রানিগঞ্জ এলাকায় শব্দবাজির দৌরাত্ম্য বিশেষ দেখা যায়নি। দুর্গাপুরে অন্যত্র শব্দবাজির দাপট না থাকলেও বেনাচিতিতে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গভীর রাত পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটে। পরিবেশ দফতরের হিসেবেও জানা গিয়েছিল, বাজির কারণে সব চেয়ে বেশি দূষণ ছড়িয়েছে ওই এলাকাতেই।
ছট পুজোয় ছবিটা পাল্টে গেল। মাঝ রাত থেকে আসানসোল জুড়ে ব্যাপক শব্দবাজি ফাটতে থাকে। বার্নপুরের দামোদর ঘাট, বরাকর নদীঘাট, কুলটির নিউ রোড, আসানসোলের গাড়ুই নদী সংলগ্ন এলাকায় শব্দবাজির দাপটে কান পাতা দায় হয়ে যায় বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, কালীপুজোয় শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণে থাকার পরে ছট পুজোতেও তা থেকে রেহাই মিলবে বলে আশা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত শব্দবাজির উপদ্রব সহ্য করতে হয়েছে। যদিও আসানসোল পরিবেশ দফতরের আধিকারিক অঞ্জন ফৌজদার জানান, তাঁদের কাছে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দেন তিনি।
দুর্গাপুরের বেনাচিতিতে অবশ্য মঙ্গলবার রাতে কালীপুজোর মতো ব্যাপক হারে বাজি ফাটেনি বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, ভিড়িঙ্গির দিকে কিছু শব্দবাজি ফেটেছে। তাতে এলাকা কেঁপে উঠেছে। তবে কালীপুজোর মতো পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে বলে মনে হয়নি। বিক্ষিপ্ত ভাবে শব্দবাজি ফেটেছে দুর্গাপুরের ইস্পাত কলোনি, ভিড়িঙ্গি, সগড়ভাঙ্গা, তামলা, গণতন্ত্রপল্লি, দুর্গাপুর বাজার ইত্যাদি এলাকায়। ভোরের দিকে বাজির আওয়াজ শোনা গিয়েছে দামোদরের বীরভানপুর ঘাট সংলগ্ন এলাকাতেও।
দুর্গাপুর ইস্পাত নগরী মহা ছটপুজো সেবা সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাকেশ কুমার অবশ্য দাবি করেন, তাঁরা ভক্তদের কাছে শব্দবাজি না ফাটানোর জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। তাতে সাড়া দিয়ে অনেকেই শব্দবাজির পরিবর্তে আতসবাজি পুড়িয়েছেন। পুলিশের দাবি, শব্দবাজি রুখতে টহল জারি ছিল। দুর্গাপুরের সহকারী ডেপুটি কমিশনার শুভঙ্কর সিংহ সরকার জানান, শব্দবাজি রুখতে টহল দেওয়া হয়েছে। বাজির আওয়াজ পেলেই পুলিশ সেই এলাকায় গিয়ে তা বন্ধ করেছে। তবে নজরদারি যে কালীপুজোর তুলনায় কম ছিল তা স্বীকার করেছে পুলিশ। |