|
|
|
|
প্রাক্তন জঙ্গির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলেন আমলা পাত্রী |
সাবির ইবন ইউসুফ • শ্রীনগর |
‘চোর-পুলিশের’ বিয়ে। আক্ষরিক অর্থে চোর আর পুলিশ না হলেও ‘সম্পর্কটা’ খানিক সে রকমই। চল্লিশ ছুঁইছুঁই পাত্র প্রাক্তন জঙ্গি ফারুক আহমেদ দার ওরফে বিট্টা কারাটে। আর পাত্রী কাশ্মীরের রাজ্য প্রশাসনের অফিসার। ২৯ বছরের আসবা আর্জুমন্দ খান।
গত কাল ছিল ফারুক আর আসবার নিকাহ। আসরে হাজির ছিলেন কাশ্মীরের তাবড় তাবড় বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা। মিরওয়াইজ উমর ফারুক, শাবির অহমেদ শাহ থেকে শুরু করে নঈম খান, নুর মহম্মদ, আরও অনেকে। |
|
বিয়ের আসরে ফারুক আহমেদ দার (বাঁ দিকে)। পাশে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুক। |
ফারুক-আসবার বিয়েতে তাঁরা সকলেই খুশি। বহু বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে অবশেষে বিয়ে করতে পেরে খুশি পাত্র-পাত্রীও।বছর তিনেক আগে এক বন্ধুর বাড়িতে আসবার সঙ্গে ফারুকের আলাপ হয়। প্রথম আলাপেই আসবার প্রেমে পড়ে যান ফারুক। পাঁচ মাসের মাথায় তিনি সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেন আসবাকে।
প্রথমে ফারুকের প্রস্তাবে রাজি হননি আসবা। না করে দিয়েছিলেন তাঁকে। এ ভাবেই কেটে যায় প্রায় দেড় বছর। শেষমেশ অবশ্য ফারুককে আর ফেরাতে পারেননি তিনি।
|
পাত্রী আসবা। |
কিন্তু এ বার বাদ সাধল আসবার পরিবার। কোনও জেল খাটা জঙ্গির সঙ্গে তাঁরা কিছুতেই মেয়ের বিয়ে দেবে না। জম্মু-কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর আসবা যখন ‘শান্তি ও সংঘর্ষমূলক’ বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে জার্মানিতে, ফারুক তখন ১৭ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। যদিও তা কেবল এক বছরের জন্য। ২০০৮-এ অমরনাথের জমি-কাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে ফের জেলে যেতে হয় তাঁকে। এ বার অবশ্য কয়েক মাস পরেই ছাড়া পেয়ে যান তিনি। এ হেন পাত্রকে নিজেদের জামাই করতে নারাজ আসবার পরিবার। এ দিকে, পাত্রী কিন্তু নিজের জায়গায় অনড়।
আসবার কথায়, “কাশ্মীরের এমন বহু পরিবারই আছে, যেখানে এক ছেলে জঙ্গি, আর এক ছেলে সরকারি চাকুরে। তাই কোনও প্রাক্তন জঙ্গিকে বিয়ে করাটা আমার কাছে এমন কিছু অবাক করা বিষয় নয়।”
তিনি বলেন, “প্রথমে পরিবারের অনেকে আমাদের সম্পর্ক না মেনে নিতে পারলেও, পরের দিকে তাঁরা মেনে নিয়েছেন। পুরনো ধ্যানধারণা থেকে সকলেরই বেরিয়ে আসা উচিত।” ফারুকের বক্তব্য অবশ্য অন্য রকম। “আমাদের বিয়েটা মানুষের কাছে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।” |
|
|
|
|
|