|
|
|
|
পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ এলাকার ব্যবসায়ী-বাসিন্দারা |
জুয়ার রমরমা দুটি হাটে, ক্ষোভ |
গৌর আচার্য • রায়গঞ্জ |
প্রায় এক মাস ধরে উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখর-২ ব্লকের চাকুলিয়া থানার দুটি হাটে রমরমিয়ে জুয়ার আসর চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে ব্লকের বিভিন্ন এলাকার বহু সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট দিনগুলিতে হাটে গিয়ে জুয়ার কারবারিদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন বলে অভিযোগ। অনেক সময় হাটে জুয়ার কারবারিদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের হাতাহাতি ও বচসা বেঁধে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এলাকার পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সমস্যার কথা বারবার পুলিশকে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। পুলিশের একাংশের মদত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করছেন বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের কাছ থেকে সব কিছু জানার পর বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। অবিলম্বে হাটগুলিতে জুয়ার আসর ও বেআইনি মদের ঠেক বন্ধ করার দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে আন্দোলনে নামার হুমকি দেওয়া হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন “যে অভিযোগ উঠেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পাশাপাশি, তিনি জানান, হাটগুলিতে জুয়ার আসর ও মদের ঠেক বন্ধ করতে পুলিশকে লাগাতার অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” জেলার বড় হাটগুলির মধ্যে অন্যতম জনতা হাট ও চাকুলিয়া হাট। প্রতি মঙ্গল ও শুক্রবার জনতা হাট ও শনি এবং বুধবার চাকুলিয়া হাট বসে। ব্লকের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ, চাষি ও ব্যবসায়ীরা ওই দুই হাটে ব্যবসা চালানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সামগ্রী কেনাবেচায় অংশ নেন। তাস ও পাশা খেলার আদলে জুয়ার কারবারিরা হাটগুলির একাধিক এলাকায় দিনভর প্রকাশ্যে জুয়ার বোর্ড বসিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। বাড়তি লাভের আশায় হাটে আসা অনেকেই গরু, ছাগল সহ বিভিন্ন গৃহপালিত পশু ও ফসল বিক্রি করে সেই টাকায় জুয়া খেলায় অংশ নিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ। অনেকে জুয়ার বোর্ডে নিঃস্ব হয়ে চোলাই মদের ঠেকে গিয়ে মদ খাওয়ার পর বাড়ি ফিরে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন বলেও অভিযোগ। নিঃস্ব হওয়ার পর অনেকের সঙ্গেই জুয়ার কারবারিদের বচসা ও হাতাহাতি বেঁধে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে বলেও হাট ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ। ফলে হাট ব্যবসায়ী ও বহু সাধারণ মানুষ হাটে গিয়ে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। অনেকে বারবার থানায় সমস্যার কথা জানালেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফরওয়ার্ড ব্লকের চাকুলিয়া লোকাল কমিটির সাধারণ সম্পাদক অশোক দাস বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে সমস্যার কথা লিখিতভাবে পুলিশ-প্রশাসনকে জানালেও হাটগুলিতে জুয়ার আসর বন্ধ হয়নি। পুলিশের মদত ছাড়া এসব চলতে পারে নাকি? নভেম্বর মাস থেকে দলের তরফে টানা আন্দোলনে নামা হচ্ছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক বীরেশ্বর লাহিড়ী বলেন, “হাটগুলিতে জুয়ার আসর ও মদের ঠেক চলছে বলে আমরাও খবর পেয়েছি। এসব সামাজিক অবক্ষয়ের ইঙ্গিত। দলের তরফে পুলিশ ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “পুলিশের মদতে হাটগুলিতে প্রকাশ্যে জুয়ার কারবার ও মদের ঠেক চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দলের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে এসব বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে নামা হচ্ছে।” জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অসীম ঘোষ বলেন, আমরা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হচ্ছি।” |
|
|
|
|
|