এই মোম জোছনায়
বার সেই রাত। গোটা একটা বছর পেরিয়ে। ছোট্ট ছোট্ট দীপের আলোয় মুছে যাবে অমাবস্যার ঘুটঘুটে আঁধার। আমার-আপনার বাড়ি সাজবে রঙিন আলোয়। তবে কিনা, এটা শর্টকাট-এর যুগ। তাই অনেকেই ঝুঁকছেন টুনি বাল্বের মতো নকশাদার ইলেকট্রিক আলোয়। কিন্তু এই বিশেষ রাতটায় এমন আলো কেমন যেন পানসে লাগে। আসলে দীপাবলির রাত শুধুই মোমবাতি আর দীপের। অন্য সব, সে দিন ভীষণ বেমানান। একটা সময়, বিকেল বিকেল মোমবাতি লাগিয়ে অপেক্ষা চলত বেশি রাতের। সব বাড়ির মোম নিভলে জ্বালানো হবে নিজেরটা। কার মোম শেষ অবধি জ্বলবে। মোমবাতির আয়ু যে মাত্র ঘণ্টাখানেক। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মোমবাতির নকশায় যেমন নতুনত্ব এসেছে, বদলেছে গুণগত মানও। নতুন এই সব মোমবাতির খরচ খানিক বেশি পড়ে বটে, কিন্তু এক বার জ্বালালে নিশ্চিন্তি। ধিকিধিকি জ্বলতে থাকবে সন্ধে পেরিয়ে রাতের গভীর অবধি। নকশাও নজরকাড়া। দীপাবলির জন্য আদর্শ। এ বারের দীপাবলির আলো কেনার আগে এক ঝলক জেনে নিন তাদের হালহদিশ।

দিয়া-মোমের মেলবন্ধন
৩৬৫-এর মধ্যে এই একটি দিনেই বুঝি পাড়ার দশকর্মা ভাণ্ডারে মাটির প্রদীপের খোঁজ পড়ে। তবে এ যুগের বাড়ি-ঘরের আধুনিক সজ্জার সঙ্গে মাটির প্রদীপও সেজেছে মানানসই নতুন সাজে। শরীরে টেরাকোটার কাজ করা এই সব প্রদীপের পোশাকি নাম ‘দিয়া’। কখনও সেটি একটি, আবার কখনও পাঁচ-ছয় বা দশ-বারোটির সেট। অর্থাৎ পছন্দের পাশাপাশি প্রয়োজন অনুযায়ী মিলবে দিয়ার সেট। নকশাও প্রচুর। তবে বছরের এই দিনটার জন্য বিশেষ কিছু হল গণেশ, স্বস্তিক চিহ্ন বা লক্ষ্মী-গণেশের প্রতিকৃতির নকশা আঁকা সব দিয়া। পছন্দ হলে নিতে পারেন পাতার নকশা করা দিয়াও। পাওয়া যাবে সোনালি, রুপোলি, সবুজ, গোলাপি, কমলা বা লালের মতো রকমারি উজ্বল রঙে। ঘরের রঙের সঙ্গে মিলিয়েও পেয়ে যাবেন দিয়া। তবে সব ছাপিয়ে এখন রমরমিয়ে চলছে ‘জেল ক্যান্ডল দিয়া’। দিয়াতে স্বচ্ছ জেলের আকারে থাকবে মোম। চট করে বোঝা যাবে না মোমের উপস্থিতি। রঙিন কিছু গ্লিটারের ছোঁয়া দিয়াগুলোকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে। নজরকাড়া নকশার জেল ক্যান্ডল দিয়ার দাম শুরু ৪০ টাকা থেকে। মেটাল লুক-এর সিঙ্গল দিয়া পাবেন ১৫০ টাকায়। ভেতরে পুঁতির নকশা করা আটটি দিয়ার সেট পাবেন ৬৫০ টাকায়। টেরাকোটার কাজের ছ’টি দিয়ার সেট মিলবে ৪৮০ টাকায়।

ভাসমান মোমবাতি
দীপাবলির রাতে বাড়িতে অতিথি আসার ব্যাপার থাকলে অবশ্যই রাখবেন ফ্লোটিং ক্যান্ডল বা ভাসমান মোমবাতি। রকমারি ফুলের নকশায় গড়া এ রকম মোমবাতির আকর্ষণই আলাদা। পুজোর ঘরে বা ঘরের কোনও বিশেষ জায়গাকে বিশেষ ভাবে সাজাতে এদের জুড়ি মেলা ভার। কাচের পাত্রে জলের ওপর জ্বলবে মোমবাতি। ফুলের নকশা ছাড়াও মিলবে শঙ্খ, ঝিনুকের আকারে গড়া ফ্লোটিং ক্যান্ডলও। দীপাবলিতে ঘরের প্রবেশ পথে রঙিন আবির দিয়ে রঙ্গোলি (আলপনা) করলে তার ওপরও নকশা করতে পারেন ফ্লোটিং ক্যান্ডল দিয়ে। তিন-চার ঘণ্টা অনায়াসে জ্বলতে থাকবে। তিনটে ফ্লোটিং ক্যান্ডল সেটের দাম পড়বে মোটামুটি ভাবে ১০০ টাকা।

বাকি সব অস্ত্র
ব্যালকনি, ছাদ সহ অন্যান্য জায়গার জন্য কিনতে পারেন টি-লাইট ক্যান্ডল। ছোট্ট টিনের ফয়েলে মোড়া এই সব মোমবাতির দাম শুরু মাত্র তিন টাকা থেকে। অনেক ক্ষণ জ্বলবে এমনটা চাইলে এর দাম পড়বে ১০ টাকা।
যে কোনও বিশেষ অনুষ্ঠানের মতো দীপাবলির রাতের জন্যও নিতে পারেন কয়েকটি পারফিউমড ক্যান্ডল। ছোট্ট কাচের জারে পারফিউমড ক্যান্ডল পাবেন ৫৫ টাকায়। কয়েক ঘণ্টা পর পর একটু নিভিয়ে জ্বালালে এই ক্যান্ডলের আয়ু হবে বেশ কয়েক দিন। এই ধরনের পারফিউমড মোমবাতি জ্বালালে ঘরে ঢুকলেই একটা মৃদু সুগন্ধে ভরে যাবে মন।

উপহারের জন্য
কাছের মানুষের জন্য কিনতে পারেন ক্যান্ডল সেট। দীর্ঘ ক্ষণ জ্বলবে এ রকম সেটের দাম শুরু ৫০০ টাকা থেকে। সেটে মিলবে দু’ধরনের ক্যান্ডল এবং ক্যান্ডল হোল্ডার। রঙিন স্পাইরাল ক্যান্ডলের সেট পাবেন ৬৫০ টাকায়। অথবা নিতে পারেন নকশা করা ক্যান্ডল স্ট্যান্ড। ছিমছাম দেখতে কাঠের বেসের ওপর পাঁচটি স্টিলের ক্যান্ডল স্ট্যান্ড-এর সেট পাবেন ৭৫০ টাকায়। সিলভার প্লেটেড আকর্ষণীয় ‘কুইন অ্যানি ক্যান্ডল স্ট্যান্ড’ ২,২০০ টাকা। উৎসবের মরসুমে তো নিজেকে নিজেই খানিক প্যাম্পার্ড করা যায়। তাই নিজের জন্যই নিতে পারেন এমন সব ক্যান্ডল সেট। বাকিটা আপনার অভিরুচি। পছন্দের আলোয় ঘর সাজান। আর মুগ্ধ চোখে সেই সৌন্দর্য শুষে নিন আরও একটি বছরের অপেক্ষায়।

ছবি: গৌতম কর্মকার
সৌজন্য: গিগল্স



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.